চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডোপ টেস্টে পজিটিভ সিএমপির ৭ পুলিশ, সাময়িক বরখাস্ত

নাজিম মুহাম্মদ 

২৩ নভেম্বর, ২০২০ | ১২:১৮ অপরাহ্ণ

শরীরে মাদক সেবনের নমুনা পাওয়ায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের  (সিএমপি) সাত পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার দায়ের করা হয়েছে।

মাদক সেবন করে সন্দেহে গত তিনমাসে কনস্টেবল থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার ৩২ জন পুলিশ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে সিএমপি। এরমধ্যে কনস্টেবল থেকে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদ মর্যাদার সাতজন পুলিশ সদস্যের নমুনার ফলাফল পজিটিভ আসে। এ সাতজনকে সময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। নগর পুলিশ কমিশনার হিসাবে সালেহ মোহাম্মদ তানভীর গত সেপ্টেম্বর মাসে যোগদানের পর পরই মাদকাসক্ত সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্টের প্রক্রিয়া শুরু করেন।

জানা যায়, আপাততঃ পুলিশ সদস্যদের গণহারে ডোপটেস্ট করা হচ্ছে না। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ থাকলে, কারো আচরণে মাদক সেবনের বহিঃপ্রকাশ ঘটলে কিংবা অভ্যন্তরীণ তদন্তে কারো বিরুদ্ধে মাদক সেবনের  প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যকে ডোপ টেস্টের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, ডোপটেস্ট একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে সাতজনের নমুনা মাদকের অস্তিত্ব মিলেছে তাদেরকে ইতিমধ্যে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

এদিকে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের ডোপ টেস্টে গত তিনমাসে ৬৮ জন পুলিশ সদস্যসের মাদক সেবনের প্রমাণ মিলেছে। এদের মধ্যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের বিভাগীয় মামলা করা হয় এবং ১৮ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। মামলা নিস্পত্তিশেষে ওই ১৮ জনের মধ্যে ১০ জনকেই চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা ) বাধ্যতামূলক করা হয়। এরপর থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন শাখায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরি প্রত্যাশীদের তালিকা পাঠানো হচ্ছে ডোপ টেস্টের জন্য। কিন্তু সীমাবদ্ধতার কারণে পরীক্ষায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই  ডোপ টেস্টে মুখের লালা পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ সাত দিন, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ দুই মাস, চুল পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ ১২ মাস এবং স্প্যাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষার মাধ্যমে গত পাঁচ বছরের মধ্যে কেউ মাদক গ্রহণ করলেও তা পরীক্ষায় ধরা পড়বে। কিন্তু বর্তমানে শুধু ইউরিন (মূত্র) ও মুখের লালা পরীক্ষার মাধ্যমে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কোনব্যক্তি শেষ ১০ দিনের ভেতর কোনও মাদক গ্রহণ করলে তা পরীক্ষায় ধরা পড়বে।

২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে ডোপ টেস্টের জন্য ৯শ টাকা ফি নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করা হয়। নন স্পেসিফিক পরীক্ষার জন্য ৬শ টাকা (যার মধ্যে বেঞ্জোডায়াজেপিন, এমফেটামাইনস, অফিয়েটস ও কেননাবিনেয়েডস পরীক্ষাও রয়েছে) এবং এলকোহল পরীক্ষার  জন্য ৩শ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়। শুধু সরকারি চাকরি নয়, বেসরকারি চাকরি প্রত্যাশীদের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট