চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রোহিঙ্গা প্রভাবশালীরা অস্ত্র সংগ্রহে বাংলাদেশিদের ব্যবহার করছে

আদালতে রাজ্জাকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

রোহিঙ্গা প্রভাবশালীরা অস্ত্র সংগ্রহে বাংলাদেশিদের ব্যবহার করছে

নাজিম মুহাম্মদ

১৬ নভেম্বর, ২০২০ | ৬:১৯ অপরাহ্ণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্র সংগ্রহ করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। আর অস্ত্র সংগ্রহের কাজে টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের ব্যবহার করছে রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝি ও প্রভাবশালী কয়েকজন মাস্টারও অস্ত্র সংগ্রহ করছে।

আজ সোমবার বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ১০ দিন আগে শাহ আমানত সেতু এলাকায় একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিনসহ গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিক আবদুর রাজ্জাক। তিনি টেকনাফের লেদা ক্যাম্প সংলগ্ন দক্ষিণ আলিখালি গ্রামের ইউসুফের ছেলে।

মূলতঃ কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত থাকলেও রোহিঙ্গাদের ফাঁদে পা দিয়ে অস্ত্র বহনকারী হিসেবে কাজ করছিল রাজ্জাক। জবানবন্দিতে রাজ্জাক জানায়, লেদা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শরণার্থী কামাল ৮ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজ্জাককে অস্ত্র আনতে ঢাকায় পাঠিয়েছিলো। ঢাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে ফেরার পথে অস্ত্রসহ ধরা পড়ে তিনি।

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে রাজ্জাক বলেন, গত ২ নভেম্বর সকালে হ্নীলা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শরণার্থী সৈয়দ নুর ফোন করে বাসায় ডেকে ৮ হাজার টাকা দেন। সৈয়দ নুর তাকে একটি ফোন নম্বর দিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম শহরে এসে ওই নম্বরে ফোন করলে রাসেল নামের এক ব্যক্তি তার সাথে দেখা করবে। কথা অনুযায়ী নগরীতে এসে ওই নম্বরে ফোন করলে রাসেল তাকে ঢাকার গুলিস্তানে এসে ফোন দিতে বলেন। পরে ঢাকায় গিয়ে গুলিস্তানে নেমে ফোন করলে রাসেল নামের ওই ব্যক্তি তাকে একটি ব্যাগ দেন। যাতে একটি পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিন ছিলো।

রাজ্জাক বলেন, ব্যাগ হাতে নিয়ে সৈয়দ নুরকে ফোন করলে তিনি অস্ত্রটি লেদা ক্যাম্পের কামালকে বুঝিয়ে দিতে বলেন। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাবার পথে শাহ আমানত সেতু এলাকার গোলচত্বরে বাকলিয়া থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন কৃষক রাজ্জাক।

রাজ্জাকের দাবি, সৈয়দ নুর, টেকনাফের পানখালীর রাসেলকে ইয়াবা দেয়। রাসেল চান্দগাঁও এলাকার ফোরকানকে ইয়াবা সরবরাহ করেন। কামালও ইয়াবা ব্যবসায়ী।

বাকলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন জানান, গত ৫ নভেম্বর মধ্যরাতে শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বর এলাকা থেকে অস্ত্রসহ রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী টেকনাফের লেদা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরবর্তীতে কামালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী কর্ণফুলী সেতু এলাকা থেকে মোবারক ও নতুন চাঁন্দগাও আবাসিক এলাকা থেকে ফোরকান নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফোরকানের বাসায় ২৩ হাজার ইয়াবা ও ৮ লাখ ৮৩ টাকা পাওয়া যায়। ফোরকানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী শনিবার বাকলিয়া শাহ আমানত সংযোগ সড়কের সিলভার প্যালেস কমিউনিটি সেন্টার এলাকা থেকে উখিয়ার তাহের (২৬), আলি জোহর (২৮) ও ভোলার চরফ্যাশনের আসমা আক্তারকে আটক করা হয়। তারা এক কিলোমিটার তানিয়ার মায়ের ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়ায় থাকেন। তিনজনের কাছে এক হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়। তিনজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট