চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজ জেল হত্যা দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ নভেম্বর, ২০২০ | ১২:২৮ অপরাহ্ণ

আজ ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর জাতির ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় কলংকজনক অধ্যায়।

১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এএইচএম কামরুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর আগে ১৫ আগস্টের পর এই চার জাতীয় নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

জাতি আজ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করবে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে পালিত হবে শোকাবহ এই দিনটি।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামীকাল সূর্য উদয়ের সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালো ব্যাজ ধারণ।- বাসস

জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে এদিন বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচাইতে ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত এবং তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান এবং লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুর রশীদ জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার এ পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য তারা আগে ভাগে একটি ঘাতক দলও গঠন করে। এ দলের প্রধান ছিল রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন। সে ছিল ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন অফিসার। ১৫ আগস্ট শেখ মনির বাসভবনে যে ঘাতক দলটি  হত্যাযঞ্জ চালায় সেই দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিল মুসলেহ উদ্দিন।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থ’নী মাসকারেনহাস তার ‘বাংলাদেশ অ্যা লিগ্যাসি অব ব্লাড’ গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরপরেই জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনাটি এমন ভাবে নেয়া হয়েছিল পাল্টা অভ্যুথান ঘটার সাথে সাথে যাতে আপনা আপনি এটি কার্যকর হয়। আর এ কাজের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক দলও গঠন করা হয়। এই ঘাতক দলের প্রতি নির্দেশ ছিল পাল্টা অভ্যুথান ঘটার সাথে সাথে কোন নির্দেশের অপেক্ষায় না থেকে  কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তারা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করবে।  পচাঁত্তরের ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটানোর পরেই কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার পর পরই পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতির জনককে তাঁর ঐতিহাসিক ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। পরে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বঙ্গবন্ধুর অপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএইচএম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

নগর আ. লীগ : মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সকাল ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিতব্য এ সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সকল কর্মকর্তা, নির্বাহী সদস্যবৃন্দ এবং থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার জন্য নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন আহ্বান জানিয়েছেন।

উত্তর  জেলা আ. লীগ : উত্তর জেলা আ. লীগের গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে চার জাতীয় নেতার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং বিকাল ৪ টায় দোস্ত বিল্ডিং দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা। এতে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য সংগঠনের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান অনুরোধ জানিয়েছেন।

দক্ষিণ জেলা আ’লীগ : দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি। আলোচনা সভায় সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান অনুরোধ জানিয়েছেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট