চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মাত্র এক ইউনিট পানির বিল ৪৪২ টাকা !

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ অক্টোবর, ২০২০ | ১২:৪৯ অপরাহ্ণ

নগরীর হালিশহর রমনা আবাসিক এলাকার ভবন মালিক মাহাবুবুল আলম দিদার। চট্টগ্রাম ওয়াসা থেকে তিনি পানির মিটার পেয়েছেন এক দশক আগে। এই দশ বছরে তিনি মাত্র ১৪১১ ইউনিট পানি পেয়েছেন। গত আগস্ট মাসে তিনি পেয়েছেন মাত্র এক ইউনিট পানি। যার জন্য বিল গুনতে হয়েছে ৪৪২ টাকা। অথচ ওয়াসার এক ইউনিট পানির দাম ১২ টাকা ৪০ পয়সা। শুধু মাহাবুবুল আলম নয়, এই আবাসিকের প্রায় ৩৫০ ভবনের

একই চিত্র। সাত হাজার লোকের এই আবাসিকে পানির লাইন আছে, মিটার আছে, প্রতিমাসে বিলও আসে। কিন্তু পানি আসে না। পানির দাবিতে এলাকাবাসী তাদের নিজ এলাকায় মানববন্ধন করেন।
রমনা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহির আহমদ চৌধুরী পূর্বকোণকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি জানালেন, আগামি ফেব্রয়ারী মাসের মধ্যে নতুন পাইপ লাইন চালু করা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘব হবে। গত এক দশক ধরেই তারা একথা শুনছেন উল্লেখ করে বলেন, এখানে অধিকাংশ ভবনের ফ্ল্যাট খালি পড়ে আছে। পানি সংকটের কারণে এখানে ভাড়াটিয়ার থাকে না। কিš ‘বাড়ির মালিকরা না পারছেন পালাতে, না পারছেন বসবাস করতে।

এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান পূর্বকোণকে বলেন, ১৭ বছর ধরে তিনি এখানে বসবাস করছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পানি না পেলেও তাদেরকে নিয়মিত ভুতুড়ে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। তিনি জানান, সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। কিন্তু পানির অভাবে ভাড়াটিয়া পাচ্ছেন। গত মাসে ব্যাংকের ৫০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করেছেন আরেকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে। তার মত অধিকাংশ ভবন মালিক এই ধরনের বিপদে আছেন।

রমনা আবাসিক কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি নুর আহমদ বলেন, গভীর নলকূপ স্থাপন করলে উঠছে ময়লা পানি। তাও সবার পক্ষে বসানো সম্ভব নয়। আবার বসালেও ওয়াসার লোকজন এসে টাকা চায়। ভাড়াটিয়া না থাকায় ঘরগুলো খালি পড়ে আছে। লোন পরিশোধ নিয়ে শংকিত তারা। এই আবাসিকের চারপাশের বাসিন্দারা পানি পাচ্ছে। এখানকার সমস্যার কথা ওয়াসাকে বারবার লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ করে শুধু আশ্বাসই জুটেছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, গড় বিল কিংবা ভুতুড়ে বিলের ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নুতন পাইপ লাইন সংযোগ দিলেই সংকট কেটে যাবে। সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে কমপক্ষে আরো তিন-চার মাস।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট