চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ফটিকছড়ির দিগন্তজুড়ে বিস্তীর্ণ আমন

রোপন লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার ৩৪০ হেক্টর,

ফটিকছড়ির দিগন্তজুড়ে বিস্তীর্ণ আমন

রোপন করা হয়েছে ২১ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে

এস.এম. মোরশেদ মুন্না

২৯ অক্টোবর, ২০২০ | ৫:২৮ অপরাহ্ণ

ফটিকছড়ি উপজেলায় দিগন্তজুড়ে আমনের সবুজের সমাহার। করোনা কৃষকদের ঠেকাতে পারেনি। করোনাকালীন গৃহবন্দি সময়টা বেশি করে জমিতে দিতে পেরেছে চাষারা। বাজারে দ্রব্যমূল্যে চড়া দামের কারণে চাষাদের চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানা যায়।

উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় আমানের শীষ এসে গেছে। ফলে, সেসব এলাকাতে আগামী একমাসের মধ্যে কৃষকেরা আমন ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, যারা একটু দেরিতে ধান লাগিয়েছেন তাদের কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে। শেষদিকে অধিক ফলনের আশায় কৃষকেরা মাঠে প্রচুর শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।

চলতি বছর ফটিকছড়ি উপজেলায় আমন রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি। রোপন করা হয়েছে ২১ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে। চালের মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৫ হাজার ৭৪০ মে.টন। চলতি বছর হেক্টর প্রতি ফলন লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে উচ্চ ফলনশীলজাতের ক্ষেত্রে ২.৮০ মেট্রিক টন (চাল), স্থানীয় জাতের ক্ষেত্রে ১.৫৫ মেট্রিক টন (চাল)। গত বছর (২০১৯) আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৩’শ হেক্টর জমি। অর্জিত হয়েছিল ২১ হাজার ৮৫০ হেক্টর। ২০১৯ এ চালের মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ছিল ৬৩ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন চাল। অর্জিত হয়েছিল ৬৪ হাজার ৩২৯ মেট্রিক টন চাল। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন বেশি হয়েছিল।

চলতি বছর আবহাওয়া ভাল, কৃষি বিভাগের সার্বিক নজরদারী, পরামর্শের কারণে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ এখন পর্যন্ত অত্যন্ত কম। ফলে আশা করা হচ্ছে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হবে।

ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছেঃ ফটিকছড়িতে দেখার মতো ধানের ফলন হয়েছে। শেষদিকের ভারি বর্ষণকে কৃষকেরা আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণী বলে জানিয়েছেন। যা আমনের জন্য খুবই ভালো হয়েছে। চলতি বছর চাষকৃত ধানের মধ্যে রয়েছে- বিআর-১০, বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৫, ব্রি ধান-৩০, ব্রি ধান-৩১, ব্রি ধান-৩২, ব্রি ধান-৩৯, ব্রি ধান-৪০, ব্রি ধান-৪১, ব্রি ধান-৪৯ (সর্বোচ্চ আবাদ), ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৭১, ব্রি ধান-৬২ (জিঙ্ক সমৃদ্ধ জাত), পাজাম, স্বর্ণা, অন্যান্য (দিনাজপুরী, বেনম্বার), চাক্কল, গিউস, বিন্নি, কালিজিরা ও বালাম ইত্যাদি।

নাজিরহাট পৌরসভার দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের কৃষক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, ফলন আমার অনেক ভাল হয়েছে। আমাদের এইদিকে পানির জন্য আমরা আমন একটু দেরিতে লাগাই। শেষদিকের বৃষ্টিপাত আমাদের খুব উপকারে এসেছে। ইনশাআল্লাহ আশানুরূপ ফলন হবে। গত বোরো আমনে আমার উৎপাদন অনেক ভাল ছিল।

জানতে চাইলে কাঞ্চনগরের এখলাস উদ্দিন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, সময়মতো কীটনাশক ব্যবহার ও রোগ-বালাই দমন করতে পেরেছি বলে আমার ফলন অনেক ভাল হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় চলতি আমন উৎপাদনে অনেক ভাল হবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ধান ঘরে তুলত পারব।

উপজেলা কৃষি অফিসার লিটন কুমার দেবনাথ জানান, এ বছর বিভিন্ন প্রকল্প হতে ৫’শ জন কৃষককে উপজেলা কৃষি অফিস হতে বিনামূল্যে সার ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। আবহাওয়া কৃষকের অনুকূলে ছিল। কৃষি বিভাগের সার্বিক নজরদারি ও পরামর্শের কারণে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ এখন পর্যন্ত অত্যন্ত কম। শেষদিকের বৃষ্টিপাত আমানের জন্য অনেক ভাল হবে। আশা করি এ বছর আমনের ফলন ভাল হবে ও কৃষকেরা লাভবান হবেন।

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট