চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রতারক চক্রের ‘বড় জালিয়াতি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ অক্টোবর, ২০২০ | ১:২৭ অপরাহ্ণ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নকল ওয়েবসাইট তৈরির পর সেটিতে পণ্য খালাসের ভুয়া ক্লিয়ারিং পারমিট (সিপি) আপলোড করে সেই তথ্য চট্টগ্রাম কাস্টমসে দাখিলের ম্যাধমে পণ্য খালাস নিতে চাইলে ধরা পরে এক জালিয়াত চক্র। তদন্ত শেষ জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গতকাল রবিবার কাস্টমস কর্তৃপক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে এ ব্যাপারে জানানো হয়।

ওই প্রতারক চক্রের মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা চীনাবাদাম ও অলিভের একটি চালানে নেসলে গুঁড়োদুধ নিয়ে আসায় ৭৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সেই চালান খালাস করতে প্রতারক চক্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি দাখিল করে। কিন্তু দাখিল করা নথিপত্র কাস্টমসের সন্দেহ হলে যাচাই-বাছাই করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। তখনই জানা যায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জালিয়াতি চক্রের পণ্য খালাসের ‘সিপি’ দেওয়া হয়নি। পরে চট্টগ্রাম কাস্টমস আরো তদন্ত করে জানতে পারে দাখিল করা সিপি ভুয়া এবং যে ওয়েব সাইটে সিপি পাওয়া গেছে সেটিও ভুয়া।

কাস্টম হাউস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ঢাকার চকবাজারের ৬৬ মৌলভীবাজার ঠিকানার মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজের নামে একটি ইনভয়েসে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি অলিভ ঘোষণায় একটি চালান আসে বন্দরে। চালানটি খালাসের জন্য কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে নিয়োজিত সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান নগরীর শেখ মুজিব রোডের প্রগ্রেসিভ টাওয়ারের খান এন্টারপ্রাইজ। সন্দেহ হলে চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় ২১ হাজার ৬০ কেজি ঘোষণা বহির্ভূত শিশুখাদ্য নেসলে গুঁড়োদুধ পাওয়া যায়।

ওই জালিয়াতির কারণে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকে ৬৬ লাখ টাকা ব্যক্তিগত জরিমানা ও ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা আরোপ করেন। একই সাথে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি দাখিল সাপেক্ষে চালানটি খালাসের আদেশ দেন।
এরই ফাঁকে প্রতারক চক্র নতুন প্রতারণার পরিকল্পনা করে। প্রতিষ্ঠানটি জব্দ হওয়া পণ্য খালাসের জন্য ১১ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি সিপি দাখিল করে। এরপর ১৩ অক্টোবর সিপি বিষয়ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি চিঠি দাখিল করে। সেই দুটি চিঠির মাধ্যমে জালিয়াত চক্র বন্দর থেকে পণ্যগুলো খালাস নিতে চেয়েছিল।
এদিকে চালানটি খালাসে দাখিল করা সিপি এবং অন্যান্য দলিলাদি যাচাই করতে গিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি এর হেডিংয়ে যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা (www.mincogov.com) রয়েছে তাতে দাখিল করা সিপি’র কপিও পাওয়া গেছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে- www.mincogov.com.bd।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার নুর-এ হাসনা সানজিদা অনসুয়া পূর্বকোণকে জানান, আমদানিকারক প্রথমত মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করে আমদানি-রপ্তানি আইন লংঘন করেছেন। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি জালিয়াতি ও ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে তাতে ভুয়া সিপি আপলোড করে কাস্টমস বিভাগকে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করার মাধ্যমে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। তাই আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে আইসিটি এক্ট ও পেনাল কোডের অধীন এফআইআর দায়েরের কার্যক্রম চলমান আছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট