চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানে হাউজিং প্রকল্প বন্ধে ৩ সচিবসহ ৯ কর্মকর্তাকে চিঠি

কক্সবাজার সংবাদদাতা

২৫ অক্টোবর, ২০২০ | ৪:৪৮ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান ও পাহাড়-টিলা সমৃদ্ধ রক্ষিত বনভূমিতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত হাউজিং প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৯ সরকারি কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’।

আজ রবিবার (২৫ অক্টোবর) ৯টি দপ্তরের কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে রক্ষিত বনভূমিতে গৃহীত হাউজিং প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের বনভূমি সংরক্ষনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। ৩ সচিব ছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালককে এ চিঠি দেয়া হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার আরএস ৬৯৯৫ দাগসহ বিভিন্ন দাগের টিলা শ্রেণীর ভূমিকে গেজেট নোটিফিকেশন মূলে ১৯৩৫ সালে রক্ষিত বনভূমি হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। একই সাথে উক্ত দাগের বনভূমিসহ আশপাশের ৪২৭১.১৫ একর বনভূমিকে ১৯৮০ সালে গেজেট নোটিফিকেশন মূলে ন্যাশনাল পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যা হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ উক্ত বনভূমিতে পরিকল্পিত ও নান্দনিক হাউজিং প্রকল্প গড়ে তুলতে ১৫৮.৮৬ একর ভূমির বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে অনাপত্তি চেয়েছে। জেলা প্রশাসক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান উক্ত ভূমি পরিদর্শন করেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথসভা এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রকল্প এলাকায় জরিপ কাজ শুরু করেছে। অথচ হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের আওতায় থাকা উক্ত এলাকা চিরহরিৎ এবং মিশ্র-চিরহরিৎ ক্রান্তিয় বনভূমি। এটি এশিয়ান হাতি, ৫৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৮৬ প্রজাতির পাখি, ১৩ প্রজাতির উভচর ও ৫৬ প্রজাতির সরীসৃপ এর আবাসস্থল। এছাড়া ১১৭ প্রজাতির উদ্ভিদে সমৃদ্ধ এক বনাঞ্চল।
এ অবস্থায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানানো হয় যে, পাহাড়-টিলা, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর উক্ত বনভূমিতে হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান বিলুপ্ত হবে। একইসাথে আশপাশের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলের জন্য ঝুঁকি এবং প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন হবে।

প্রকৃতি রক্ষায় হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান ও রক্ষিত বনভূমিতে গৃহীত হাউজিং প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ, উক্ত ভূমি কাউকে বন্দোবস্ত না দেয়া, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের ৪২৭১.১৫ একর বনভূমি সংরক্ষনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের মতো বনভূমিতে হাউজিং প্রকল্প গড়ে তোলা হলে প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন হবে। আইনগতভাবে সেখানে কোন প্রকল্প গ্রহণের সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। যার কারণে বনভূমিতে হাউজিং প্রকল্পের কর্যক্রম বন্ধ, উক্ত ভূমি কাউকে বন্দোবস্ত না দেয়া এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের বনভূমি সংরক্ষনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।

পূর্বকোণ/আরফাতুল-এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট