চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আজ মহানবমী

সন্ধ্যার পর ভক্তের ভিড়

মিটু বিভাস

২৫ অক্টোবর, ২০২০ | ১:৩৪ অপরাহ্ণ

টানা দু’দিনের বৃষ্টির পর অবশেষে অষ্টমীতে সূর্যের এক চিলতে হাসি। ভক্তদের মনেও যেন ফিরে এসেছে পূজোর আনন্দ। এর মধ্যে নতুন শাড়ি পরে মায়ের চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেছেন ভক্তরা। মহাষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা। সকল নারীর মধ্যে মাতৃরূপ এই উপলব্ধি সবার মধ্যে জাগ্রত করার লক্ষ্যে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

নগরীতে পাথরঘাটা রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে গতকাল শনিবার সাড়ে দশটায় শ্রীমৎ শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজের পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। এবার কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয়েছে সেন্ট যোসেফ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রেয়া বিশ্বাসকে (তাথৈ)। তার বয়স ৯ বছর হওয়ায় কালসন্দর্ভা নামে পূজা করা হয়। শাস্ত্রমতে এ নামের কুমারী পূজিত হলে দারিদ্র্য ও শত্রু বিনাশ হয়। শ্রেয়া দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের ডা. বিপ্লব বিশ্বাস ও স্মৃতিকণা বিশ্বাসের বড় নাতনি। তার বাবা শ্যাম কুমার বিশ্বাস ও মা তনিমা বিশ্বাস (টিনা)।

কোভিড আবহে এবার সবই বদলেছে। বদলেছে পূজোর ধরণ। সে মণ্ডপ তৈরির ক্ষেত্রেই হোক কিংবা প্রতিমা দর্শনে। সবকিছুতেই করোনার কোপ। গতকাল অষ্টমীর অঞ্জলিতেও সেই করোনার থাবা। তারপরও সীমিত পরিসরে মণ্ডপে দেবী দুর্গার চরণে সেই ফুল ও বেলপাতা অর্পণ করা হয়। এরপর হয় সন্ধিপূজা। সেখানেও পূজো উদ্যোক্তা ছাড়া কোনো ভক্তের সমাগম হয়নি। তারপর সব যেন অন্যরকম। দুপুরের পর থেকে যেন পূজার্থীরা ভুলেছেন করোনার সব স্বাস্থ্যবিধি। পূজা মণ্ডপে বাড়তে শুরু করে দর্শনার্থীর ভিড়। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই চট্টগ্রামের সব মণ্ডপে নেমেছিল পূজার্থীদের ঢল।

করোনা মহামারীর কারণে এবার সন্ধ্যা আরতির পর পূজামণ্ডপ বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও নগরীর বিভিন্ন পূজায় আরতি চলে গভীর রাত পর্যন্ত। নগরীর প্রধান কয়েকটি মণ্ডপে আয়োজকদের স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রচেষ্টা থাকলেও ভক্তদের চাপে অধিকাংশ মণ্ডপে ভেঙে পড়েছে সকল নিয়ম। ষষ্ঠী ও সপ্তমীতে বৃষ্টির কারণে পূজার্থীরা বের হতে পারেনি। গতকাল অষ্টমীতে দল বেঁধে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীদের ভিড় করতে দেখা যায়। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকেই। উৎসব বাদ দিয়ে সাত্ত্বিকভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ভক্তদের আবেগের কাছে তার কোন মূল্য নেই।

মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট চন্দন তালুকদার পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমরা জে. এম. সেন হল প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রাত দশটার মধ্যে পূজার সকল আয়োজন সম্পন্ন করছি। অন্যান্য মণ্ডপগুলোতে তেমন নির্দেশনা রয়েছে। তবে সন্ধ্যা হতেই নগরীতে পূজার্থীদের ভিড় বাড়ছে।

দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব যা বাঙালির সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। যতই নিয়মকানুনের বেড়াজালে আটকে রাখার চেষ্টা করা হোক না কেন, দর্শনার্থীদের চাপ সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়ছে’। অষ্টমী পেরিয়ে আজ নবমী। ভোর ৫টা ১৭মিনিট থেকে সকাল ৭টার মধ্যে দুর্গাদেবীর মহানবমী কল্পারম্ব ও বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী নিশিথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট