চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

১০ দিন পর রহস্য উদঘাটন হল বিকাশ এজেন্ট বিজয় হত্যার

১০ দিন পর রহস্য উদঘাটন হল বিকাশ এজেন্ট বিজয় হত্যার

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ অক্টোবর, ২০২০ | ১১:০৪ অপরাহ্ণ

বন্ধুর কাছে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে লাশ হলো বিকাশ এজেন্ট বিজয় কুমার বিশ্বাস। হত্যার পর লাশ গুমেরও চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বস্তাবন্দী লাশ সড়কের পাশে ফেলে দেয় বন্ধু আবদুর রহমান। নৃশংস খুনের ১০ দিনের মাথায় বিজয় হত্যার অভিযুক্ত থাকার অপরাধে শুক্রবার রাতে আবদুর রহমানকে নেভী সেলার্স কলোনির রঙধনু স্কুল গলির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তারকৃত আব্দুর রহমান (৪০) গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের গোলাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে। নগরীর ইপিজেড থানার নেভি ওয়েলফেয়ার মার্কেটের দোতলায় আব্দুর রহমানের রাইড এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স হাওলাদার বিল্ডার্স নামে দুটি দোকান আছে। তার বাসা বন্দরটিলা এলাকায়।

সিআইডি’র চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ জানান, পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ী বন্ধু কর্মচারীকে নিয়ে গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে বিজয়কে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়। পরে ওই ব্যবসায়ী বন্ধু পালিয়ে গিয়ে অপহরণ নাটক সাজায়। গত ১৫ অক্টোবর সকালে নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকায় আলিফ গলি থেকে বিজয় কুমার বিশ্বাস (৩২) নামে এক বিকাশ এজেন্টের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিজয় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রয়াত সন্তোষ কুমার দাশের ছেলে।

সিআইডি কর্মকর্তা জানান, নগরীর নেভী ওয়েলফেয়ার মার্কেটের নিচতলায় চাঁদনী এন্টারপ্রাইজ এন্ড গিফট শপ ও বিকাশ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান আছে বিজয়ের। লাশ উদ্ধারের পর বিজয়ের বড় ভাই সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বাদি হয়ে নগরীর পাহাড়তলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ২০ অক্টোবর মামলাটির তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। এর আগে লাশ উদ্ধারের সময় সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছিল।

পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ জানান, মামলার তদন্তভার দেয়া হয় সিআইডি’র পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে। তদন্তে একই মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের সম্পৃক্ততা পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিজয় হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে রহমান।

তিনি বলেন, ‘আব্দুর রহমান ও বিজয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। এর সুবাদে আনুমানিক ৮-৯ মাস আগে বিজয়ের কাছ থেকে আব্দুর রহমান দেড় লাখ টাকা সুদে ঋণ নেন। কিন্তু আব্দুর রহমান সুদ-আসল কিছুই পরিশোধ করছিলেন না। হত্যাকাণ্ডের আগে বিজয় টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আব্দুর রহমানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আব্দুর রহমান ও তার কর্মচারী নাছির উদ্দিন মিলে গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে বিজয়কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর দুজনে মিলে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরে পেপার ও ককশিট দিয়ে মুড়িয়ে প্রথমে রিকশা এবং পরে সিএনজি ট্যাক্সিতে উঠিয়ে ফেলে দিয়ে আসে সড়কে।’ পরে আব্দুর রহমান ও নাছির দু’জনই পালিয়ে যান। আব্দুর রহমান নীলফামারীর সৈয়দপুরে আত্মগোপনে থেকে অপহরণ নাটক সাজান। গ্রেপ্তার এড়াতে নিজের এবং নিহত বিজয়ের মোবাইল ফোন সিমসহ নষ্ট করে ফেলেন। পলাতক নাছির উদ্দিনকেও (২৩) গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট