চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

আজ মহাষ্টমী ও কুমারী পূজা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ অক্টোবর, ২০২০ | ৩:০৩ অপরাহ্ণ

ভোরের আলো ফোটা থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তাঁর মধ্যেই ঢাক, কাঁসর ও শঙ্খের ধ্বনিতে প্রকম্পিত মন্ডপগুলো। নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজোর মূল অনুষ্ঠান। সকালে নবপত্রিকা প্রবেশ ও সপ্তমীবিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল মহাসপ্তমীর দিন দুপুরে বিভিন্ন মন্ডপে করোনামুক্তি এবং দেশ-জাতি ও বিশ্ব শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল থেকে বৃষ্টি কমায় মন্ডপে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর সংখ্যা। তবে করোনা মহামারীর কারণে সন্ধ্যা আরতির পর বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ পূজামন্ডপ। বৃষ্টি এবং কঠোর স্বাস্থ্যবিধির কারণে গতকাল পূষ্পাঞ্জলি প্রদান হয় সীমিত আকারে। বৃষ্টি ও করোনা এ দুই প্রতিকূলতার মধ্যেও কেউ কেউ এসেছেন মন্ডপে। ভক্তে ভিড় এড়াতে নগরীর বিভিন্ন মন্ডপে ফেসবুক ও ইউটিউবে সরাসরি পূষ্পাঞ্জলি প্রদান করছে। এর মধ্যে রহমতগঞ্জ চট্টল মহাশক্তি সম্মিলনী দেওয়ানজী পুকুর পাড় পূজা মন্ডপ থেকে প্রতিদিন কেবল টিভি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান সিসিএল’র মাধ্যমে সরাসরি ভার্চুয়াল অঞ্জলি প্রদান করা হচ্ছে।

চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গতকাল প্রথম দিনের পূজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ দুর্গাপূজার মহা অষ্টমী। অকল্যাণের প্রতীক মহিষাসুর বধের চূড়ান্ত পর্যায়। শারদীয় দুর্গা উৎসবে অষ্টমী পূজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিনে রীতি মেনে দেবী দুর্গাকে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করা হয়। বিধিসম্মতভাবে অষ্টমীবিহিত পূজা করে দেবী দুর্গার কৃপা প্রার্থনা করেন ভক্তরা। অষ্টমী তিথির পূজায় নয়টি পাত্রে বিভিন্ন রঙের পতাকা স্থাপন করা হয় যা দেবীর নয়টি শক্তিকে উৎসর্গ করে করা হয়। স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে অধিষ্ঠিত দেবীকে নানা উপাচারে আরাধনা করে সব অনাচার আর সংকট মোচন এবং বিশ্ববাসীর শান্তি প্রার্থনা করেন ভক্তরা। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মহা অষ্টমীর বিহিত পূজা শুরু হবে। বেলা ১১টা ২৮ মিনিট থেকে ১২টা ১৬ মিনিটের মধ্যে মহা অষ্টমী ও মহানবমীর তিথির সংযোগ সময়ে সন্ধিপূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে মহা অষ্টমী।

এবার অষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে পাথরঘাটাস্থ রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে। করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল সাড়ে দশটায় শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজের পৌরহিত্যে কুমারী পূজার শুরু হবে। দেবী পুরাণে কুমারী পূজার সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। সেকালে মুনিঋষিরা কুমারীপূজার মাধ্যমে প্রকৃতিকে পূজা করতেন। প্রকৃতি মানে নারী। সেই প্রকৃতিরই আর এক রূপ কুমারীদের মধ্যে দেখতে পেতেন তাঁরা। তাঁরা বিশ্বাস করতেন মানুষের মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বরের অযুত প্রভাব। কারণ মানুষ চৈতন্যযুক্ত। আর যাঁদের সৎ মন কলুষতামুক্ত, তাঁদের মধ্যে আবার ঈশ্বরের প্রকাশ বেশি। কুমারীদের মধ্যে এই গুণগুলি থাকে মনে করেই তাদের বেছে নেয়া হয় এই পূজার দেবী হিসেবে। শাস্ত্র অনুসারে সাধারণত এক বছর থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা কুমারীকে পূজার উল্লেখ রয়েছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট