চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

পণ্যবাহী ট্রেনে গতির ঝড়!

আল-আমিন সিকদার

২৩ অক্টোবর, ২০২০ | ১:০৯ অপরাহ্ণ

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া ইঞ্জিনের কারণে দিন দিন কমে আসছিল রেলের গতি। যেমনি সঠিক সময়ে স্টেশনে পৌঁছাতো পারতো না যাত্রীবাহী ট্রেন তেমনি এর থেকেও করুণ অবস্থা ছিল পণ্যবাহী ট্রেনের। কারণ, যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোর তুলনায় কিছুটা পুরাতন ইঞ্জিন দিয়ে চলতো রেলের পণ্য পরিবহন। ঝিমিয়ে পড়া এই রেলে গতি ফেরাতে সম্প্রতি কোরিয়া থেকে আমদানি করা হয় ১০টি ইঞ্জিন। ৪শ কোটি টাকা ব্যয়ে আনা দুই হাজার হর্স পাওয়ারের হুন্দাই-এর এ অত্যাধুনিক ইঞ্জিনগুলো ছুটতে পারবে ঘণ্টায় ১১০ কি.মি বেগে। রেলের আয়ের সিংহভাগের যোগান দাতা যে পণ্য খাত, সে খাতে সময় ও রাজস্ব বাড়াতে এ ইঞ্জিনগুলোর ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছিলো সংশ্লিষ্টরা।
কথা অনুযায়ী কাজও করলো রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। গত বুধবার সকাল ১০ টায় নতুন এ ইঞ্জিন (৩০০১) নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে সিজিপিওয়াই ইয়ার্ড ছেড়েছে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন। প্রথম যাত্রায় ৩১টি কন্টেইনার ও একটি গার্ড রেক নিয়ে যাত্রা করেছে নতুন এ ইঞ্জিন। প্রথম দিনেই গতি ক্ষমতার জানান দিয়েছে ইঞ্জিনটি। পণ্যবোঝাই কন্টেইনার নিয়ে ঘণ্টায় ছুটেছে ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে। যা পূর্বের গতির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। শুধু তাই নয়, প্রথম দিনেই পূর্বের চেয়ে ১০ ঘণ্টা আগে গন্তব্যে পৌঁছেছে এ কন্টেইনারবাহী ট্রেনটি।

পরিবহন সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ১০টায় সিজিপিওয়াই ইয়ার্ড থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা কন্টেইনারবাহী ট্রেনটি ছাড়া হয় কোরিয়া থেকে আনা নুতন ইঞ্জিন দিয়ে। নতুন এ ইঞ্জিন দিয়ে এটাই প্রথম পণ্যবাহী যাত্রা। পূর্বে পণ্যবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনগুলো পুরাতন হওয়ায় ঘণ্টায় ২০-২৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটতো। কিন্তু অত্যাধুনিক এ ইঞ্জিন কন্টোইনার বোঝাই ট্রেন নিয়ে ঘণ্টায় ছুটেছে ৫০ কি.মি থেকেও বেশি গতিতে। এতে করে পূর্বে পণ্যবাহী ট্রেনের ঢাকা পৌঁছাতে ২০-২২ ঘণ্টা সময় লাগলেও এখন লাগছে ১১-১২ ঘণ্টা। প্রথম দিনেই ১২ ঘণ্টায় গন্তব্যে পৌঁছেছে কোরিয়ান ইঞ্জিন নিয়ে যাত্রা করা ট্রেনটি। এতে করে কমেছে সময়। সাথে সাথে ট্রিপ সংখ্যা ও রাজস্বও বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাইতো, পণ্য পরিবহনে আরও দুটি অত্যাধুনিক ইঞ্জিন সংযুক্ত করতে যাচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশ গুপ্ত পূর্বকোণকে বলেন, ‘রেলে গতি আনতে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ৪’শ কোটি টাকা ব্যয়ে কোরিয়া থেকে ১০টি অত্যাধুনিক ইঞ্জিন আনা হয়। দ্রুতগতি সম্পন্ন এ ইঞ্জিনগুলো যুক্ত হচ্ছে পূর্বাঞ্চলের বহরে। যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রেনে এ ইঞ্জিন সংযুক্তের পরিকল্পনা ছিল। সে পরিকল্পনা থেকে বুধবার প্রথম পণ্যবাহী ট্রেনে একটি ইঞ্জিন যুক্ত করা হয়। প্রথম দিনেই গতি এসেছে পণ্য পরিবহনে। পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে ছুটেছে নতুন ইঞ্জিনের কন্টেইনার বোঝাই ট্রেনটি। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছেছে গন্তব্যে। এতে করে সময় সাশ্রয় হবে, বাড়বে ট্রিপ সংখ্যাও। ফলে রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে। কারণ, রেলের বৃহৎ আয়ের একটি পণ্য পরিবহন খাত। তাইতো, রাজস্ব বাড়াতে এবং পণ্য পরিবহনে গতি আনতে নতুন ইঞ্জিন বহর থেকে আরও ২টি ইঞ্জিন যুক্ত করা হবে এ খাতে। বাকি ইঞ্জিনগুলোও ধীরে ধীরে ট্রায়াল শেষে যুক্ত হবে যাত্রীবাহি ট্রেনগুলোতে।’

পূর্বকোণ/এএ

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট