চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে কুমির চাষে বিস্ময়কর সাফল্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাইক্ষ্যংছড়ি

২১ অক্টোবর, ২০২০ | ১:৫৮ অপরাহ্ণ

পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুমে কুমির চাষে বিস্ময়কর সাফল্য এসেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে চার শতাধিক কুমির বিদেশে রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা কুমির চাষ প্রকল্পটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হলে আরও বেশি কুমির বিদেশের মাটিতে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত সোমবার সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম মৌজার ২৫ একর পাহাড়ি জমিতে আকিজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ২০০৮ সালে গড়ে তোলে আকিজ ওয়াইল্ড লাইফ ফার্ম লিমিটেড নামের কুমিরের খামারটি। তবে বাণিজ্যিকভাবে তারা কুমিরের চাষ শুরু করে ২০১০ সালে। প্রথম দফায় অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে ৫০টি অস্ট্রেলীয় প্রজাতির কুমির আমদানি করে খামারের উন্মুক্ত জলাশয়ে ছাড়া হয়। প্রতিটি কুমির কিনে আনা হয়েছিল তিন লাখ ৫০ হাজার টাকায়। এর মধ্যে ৪টি কুমির মারা গেলেও সুস্থ রয়েছে ৪৬টি। তার মধ্যে ৩১টি মাদি কুমির আর ১৫টি পুরুষ। একেকটি কুমির প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় লাগে প্রায় ৮-১০ বছর। প্রাপ্তবয়স্ক একেকটি মাদি কুমির ৪০-৮০টি করে ডিম দেয়। এরা ডিম দেয় সাধারণত বর্ষাকালে। ডিম ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রেখে ৮০-৯০ দিনে ইনকিউবেটরে বাচ্চা ফোটানো হয়। বর্তমানে খামারে বাচ্চাসহ ছোট-বড় কুমিরের সংখ্যা ৩৪০০টি। খামারে উন্মুক্ত জলাশয় ও খাঁচার ভেতরে দুইভাবেই কুমির রাখা হয়েছে।
আকিজ ওয়াইল্ড লাইফ ফার্ম লিমিটেডের কুমির প্রকল্পের এডভাইজার ঝুলন কান্তি দে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চার শতাধিক কুমির মালয়েশিয়ায় রপ্তানির টার্গেট রয়েছে। এসব কুমির রপ্তানি করলে ৪০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, রপ্তানির জন্য প্রস্তুতকৃত প্রতিটি কুমির ৫ ফুট লম্বা, ওজন ২০-২৫ কেজি। চামড়া ছাড়াও কুমিরের প্রতি কেজি মাংস ৩০ ডলারে বিক্রি হয় বিদেশে। উক্ত কুমিরগুলো লবণাক্ত এবং মিঠা পানিতে বসবাসযোগ্য বলে জানান তিনি।
স্থানীয় নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, ঘুমধুমে কুমির খামারটি গড়ে উঠায় স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের পথ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে খামারে ২০ জন কর্মচারী ও দুজন প্রকল্প কর্মকর্তা রয়েছেন। প্রতিদিনই খামারটি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট