চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চিকিৎসক ও আইনজীবীদের জটিলতা: কেন আলাদা ট্রেড লাইসেন্স

ইফতেখারুল ইসলাম

১৯ অক্টোবর, ২০২০ | ৫:৪৭ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ গেজেটের ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারির অতিরিক্ত সংখ্যায় আইনজীবী এবং চিকিৎসকদের চেম্বারের জন্য ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু সাড়ে চার বছরেও এই দুই পেশাজীবীর ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে জটিলতা কাটেনি। একারণে কার্যকর বা সংশোধন হয়নি গেজেট। আইনজীবী এবং চিকিৎসকদের দাবি তাদের ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দাবি যেহেতু সরকারি গেজেট আছে তাদেরকেও লাইসেন্স নিতে হবে।

গেজেটে প্রকৌশলী, চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসকের চেম্বারের জন্য ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার বিধান রয়েছে। এর মধ্যে যারা আয়কর প্রদানযোগ্য আয় করেন তাদের ফি ৫ হাজার টাকা এবং যাদের আয় আয়কর প্রদানযোগ্য নয় তাদের ট্রেড লাইসেন্স ফি ২ হাজার ৫শ টাকা। স্থাপত্য প্রকৌশল ফার্মের ফি ৫ হাজার টাকা। যেসব পেশাজীবীদের নাম গেজেটে উল্লেখ আছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চেম্বার করেন আইনজীবী এবং চিকিৎসকরা।

অপরদিকে, আইনজীবীদের ট্রেড লাইসেন্স ফি এক হাজার টাকা এবং সলিসিটর ফার্ম/আইন উপদেষ্টা ফার্মের জন্য ফি দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিছু প্রকৌশলী এবং স্থপতি চেম্বার করেন। তবে তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামে চিকিৎসক এবং আইনজীবীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। এর মধ্যে চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার এবং আইনজীবীর সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। তবে তাদের সবাই চেম্বার করেন না। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চিকিৎসকের সংখ্যা সাত হাজার হলেও অর্ধেক চিকিৎসকেরও প্রাইভেট চেম্বার নেই। জুনিয়র চিকিৎসকদের বেশির ভাগই হাসপাতাল ক্লিনিকে চাকরি করেন। আবার অনেকেই মফস্বলে চেম্বার করেন। অপরদিকে, আইনজীবী সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার হলেও প্র্যাকটিস করেন সাড়ে চার হাজারের মত।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, আইনজীবীর বার কাউন্সিল থেকে নিবন্ধন নেয়। এটা কোন ট্রেডিং বিজনেস নয়। তাই সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশ গেজেটে ট্রেড আইজীবীদের ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার নির্দেশনা আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন অতীতেও চেয়েছিল পারেনি। আন্দোলনের মুখে সেটা বন্ধ হয়েছিল। তিনি জানান, আইনজীবী সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। এর মধ্যে সবাই প্র্যাকটিস করে না। প্র্যাকটিসে আছেন সাড়ে চার হাজারের মত।

বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, যদি সিটি কর্পোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার কোন প্রস্তাব আসে তাহলে কেন্দ্রীয় বিএমএ’র সাথে আলাপ করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে চিকিৎসকরা যেসব হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চেম্বার করেন, সেসব হাসপাতাল তার পুরো ভবনের জন্যই ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করে। যেখানে চিকিৎসকের চেম্বারও অন্তর্ভুক্ত। এখানে যদি চিকিৎসককেও তার চেম্বারের জন্য আলাদা ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয় তাহলে একই ভবনের জন্য দুইবার লাইসেন্স নেয়া হয়ে যাবে। তাই হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চেম্বার করা চিকিৎসকদের লাইসেন্স নেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।

চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, আইনগতভাবে তারা ট্রেড লাইসেন্স নিতে বাধ্য। তারা যাতে ট্রেড লাইসেন্স নেন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় বসে সেটি ঠিক করা হবে।

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট