চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ট্রাফিকের এবারের চেষ্টাও বৃথা!

আল-আমিন সিকদার

১৮ অক্টোবর, ২০২০ | ১:৫৬ অপরাহ্ণ

নানা বৈঠক আর আলোচনা শেষে ঘোষণা দিয়ে ভিআইপি রোডে রিকশা বন্ধ করাসহ ৪টি সিদ্ধান্ত নেয় নগর ট্রাফিক বিভাগ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গেল বছরের ৬ নভেম্বর থেকে ভিআইপি রোডে বন্ধ করে দেয়া হয় রিকশা চলাচল। মূলত, দেওয়ানহাট থেকে বারিকবিল্ডিং এলাকাটি বাণিজ্যিক জোন হিসেবে পরিচিত। সেজন্যই দুই কিলোমিটারের এই রোডটিকে যানজটমুক্ত রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেয় নগর ট্রাফিক বিভাগ। তবে ট্রাফিকের এই সিদ্ধান্তে ‘গুড়ে বালি’। শুধু কি তাই, রিকশাগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে এবং অবৈধ রিকশা চলাচল বন্ধে আরও ২টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেখানে বাধ্যতামূলক করা হয় চালকদের হলুদ ইউনিফর্ম এবং অবৈধ রিকশা বন্ধে রেজিস্ট্রেশন প্লেটে বারকোড বসানো। যদিও বারকোড বসানো নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি দিয়েছিল ট্রাফিক বিভাগ। তবে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
এদিকে, এক যুগ আগেও প্রায় একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাফিক বিভাগ। সেটিও কার্যকর হয়নি। তাই এবারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়েও তাৎক্ষণিক সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সময় ট্রাফিক বিভাগ এবারের কার্যক্রম সফল হবে বলে জানালেও পরিণতি হয়েছে সেই একই। বৃথাই হল এবারের উদ্যোগও। কারণ, যেমনি ভিআইপি সড়কে এখন অবাধে চলছে রিকশা তেমনি আলোরমুখই দেখেনি বাকি দুই উদ্যোগ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেওয়ানহাট হতে বারিকবিল্ডিং পর্যন্ত মূল সড়কে বন্ধ থাকার কথা ছিল রিকশা চলাচল। তবে প্রধান সড়কে উঠতে না পারলেও মোড় ক্রস করে রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়ার অনুমতি ছিল চালকদের। তবে এই দুই কিলামিটার রোড ক্রস করতে চালকদের গায়ে থাকতে হবে হলুদ ইউনিফর্ম। যা বাস্তবায়নই করতে পারেনি ট্রাফিক বিভাগ। সরেজমিনে এসব সিদ্ধান্তের একটিরও দেখা মেলেনি ভিআইপি রোডে। ভিআইপি রোডে অবাধে চলছে রিকশা। চালকদের শরীরে নেই ইউনিফর্ম এবং রিকশার রেজিস্ট্রেশন প্লেটেও দেখা মেলেনি বারকোডের। এমনকি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রথমদিকে এ রোড সংশ্লিষ্ট প্রতিটি গলির মোড়ের সামনে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেলেও এখন কেউ নেই।
যদিও ভিআইপি রোডে রিকশা চলাচল নিয়ে সাধারণ মানুষের কোন অভিযোগ ছিল না। উল্টো রিকশা চললে সুবিধা হয় বলে জানিয়েছেন অনেক যাত্রী। তবে যাত্রীদের অভিযোগ না থাকলেও রিকশা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন প্রাইভেট গাড়ি থেকে শুরু করে বড় যানবাহনগুলো। তাদের অভিযোগ, রিকশার কারণে ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় এ থেকেই যানজটের সৃষ্টি হয়। কারণ, বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় এই সড়কে গাড়ির চাপ অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন তারা।
পুলিশ ফোর্স সংকটের কারণে রিকশা চালকরা এ সুযোগ পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দর বিভাগের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মশিউর রহমান। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘পুলিশে পদোন্নতি পরীক্ষা চলছে। তাই ফোর্সের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। যার কারণে ভিআইপি রোডে রিকশা চলাচল বন্ধে প্রতিটি মোড়ে যে ১০ দশজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতো তারা কেউ নেই। পরীক্ষা শেষে নতুন করে ফোর্সদের দায়িত্ব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।’ তবে বাকি দুই সিদ্ধান্ত কেনো আলোর মুখ দেখেনি জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনকে চিঠি দেয়ার সেই পুরনো গল্পের কথাই জানান।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট