চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রাম আদালতে বিচারকের কক্ষের সামনে হামলা!

দুই সহোদরসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা

চট্টগ্রাম আদালতে বিচারকের কক্ষের সামনে হামলা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ অক্টোবর, ২০২০ | ১১:২৮ অপরাহ্ণ

নগরীর লালখান বাজারের সেই দুই সহোদরের নেতৃত্বে এবার বিচারকের কক্ষের সামনেই হামলার শিকার হয়েছেন এক আসামি। হামলার শিকার মোক্তার আহমদ নামে ওই আসামি ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলায় অভিযুক্ত। তিনি আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। একই সময়ে আরো দু’জন আহত হয়েছেন।

আজ সোমবার (১২ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে নতুন আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় চট্টগ্রামের এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে সোমবার নগরীর কোতায়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে দুই সহোদর মাঈনুদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ এবং ওয়াসিমসহ ১৫ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সবাই লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারী।

সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি মোক্তারের আইনজীবী শাহেদুল আজম শাকিন জানান, মোক্তারসহ ১০ জন আসামি সোমবার (গতকাল) সকালে ওই আদালতে হাজিরা দেন। হাজিরা শেষে বের হওয়ার পর আদালত কক্ষের সামনেই প্রথমে ২০-২৫ জন মিলে মোক্তারকে টানাহেঁচড়া শুরু করে। হাজিরা দেওয়া কয়েকজন আসামিসহ মোক্তারের কয়েকজন বন্ধু তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। এসময় তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন হামলাকারীরা।

তিনি আরও জানান, এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশত তরুণ-যুবক ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে সেখানে আসেন এবং মোক্তারদের মারধর শুরু করেন। কয়েকজন ছোরাও বের করেন। হামলায় আহত মোক্তারসহ তিনজন কোনরকমে ছাড়া পেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে ঢুকে যান। মোক্তার নিজেই আদালতকে বিষয়টি জানান। তখন আদালত তাকে কোতোয়ালী থানায় গিয়ে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। থানা মামলা গ্রহণ না করলে আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান।

শাকিন বলেন, মোক্তার নিজেই আমার কাছে তার ওপর হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। আমি আদালত কক্ষে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিষয়টি বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথার গুরুত্ব দেননি। পরে যখন সত্যিই হামলা শুরু হয়, পুলিশ সদস্যদের দেখি ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় আদালত কক্ষের ভেতরে জড়ো হয়ে আছেন। আমি হামলা ঠেকানোর অনুরোধ করতে পুলিশের এডিসি-প্রসিকিউশনের কক্ষে যাই। সেখানে তিনি ছিলেন না। পরে কোতোয়ালী থানা থেকে পুলিশ আসে। ততক্ষণে হামলাকারীরা চলে যায়’।

নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, ‘প্রথমে মোক্তারের ওপর হামলা হয়। তারপর আসামিদের দু’পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। মোক্তার ও আরিফ নামে দুজন সামান্য আহত হয়েছেন। মোক্তারের বন্ধু জাবেদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে’।

২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ার নিজ বাসার সামনে নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে পিটিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

ঘটনায় জড়িতরা মাসুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিল। মাসুমের নির্দেশে সুদীপ্তকে খুন করা হয়েছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন নগর ছাত্রলীগের নেতারা। মিজানুর রহমান নামে এক আসামিও জবানবন্দিতে ‘বড় ভাই’ মাসুমের নির্দেশে খুনের কথা উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে আসামিদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়।

সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলায় ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট দিদারুল আলম মাসুমকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। মামলাটি এখনও তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট