চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কোটি টাকার ওভারটাইম !

আল-আমিন সিকদার

৭ অক্টোবর, ২০২০ | ১২:৪০ অপরাহ্ণ

নগরীর পাহাড়তলীতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমেটিভ কারখানাটিতে কাজ চলছে ৫০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে। ২৯০ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও সেখানে কাজ করছেন ১৪৭ জন শ্রমিক। এতে করে রেল পরিবহনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লোকোমেটিভ (ইঞ্জিন) সারানোর কাজে কমছে গতি। অর্থবছরের নিয়মিত টার্গেট পূরণে তাই বিদ্যমান শ্রমিকদের বাধ্য হয়ে দিতে হচ্ছে ওভারটাইম। ওই স্বল্প শ্রমিকদের বছরে ১ কোটি টাকারও বেশি ওভারটাইম দিয়ে টার্গেট পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কারখানাটি। কারখানার কর্ম-ব্যবস্থাপক এই স্বল্প শ্রমিক দিয়ে মেরামত কার্য সম্পাদন করতে হিমশিম খাওয়ার কথা স্বীকার করলেও নিয়মিত মেরামত কাজও চলছে বলে জানান পূর্বকোণকে। তবে স্বল্প শ্রমিক নিয়ে রেলকে আর বেকায়দায় পড়তে হবে না বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেলের ইঞ্জিন মেরামত করার কারখানা পাহাড়তলীতে ২৯০ জন শ্রমিকের বিপরীতে কাজ করছেন ১৪৭ জন শ্রমিক। চাহিদার চেয়ে যোগান কম হলে যেমন বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায় এখানেও ঠিক এমনটাই ঘটেছে। স্বল্প শ্রমিক দিয়ে টার্গেট পূরণ করতে নিয়মিত কোটি টাকা ওভারটাইম পরিশোধ করতে হচ্ছে রেল বিভাগকে। প্রতিবছর বেতনের পাশাপাশি এসব শ্রমিকরা ওভারটাইম নিচ্ছে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা। এতে করে নতুন শ্রমিক না নিয়েও রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
কারখানার কর্মব্যবস্থাপক রাজীব কুমার দেবনাথ পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রতিবছর নতুন নতুন লোকোমেটিভ (ইঞ্জিন) আসছে দেশে। যত লোকোমেটিভ আসছে তত এ কারখানার কাজ বাড়ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে শ্রমিক বাড়ছে না। অর্ধেকেরও কম শ্রমিক নিয়ে আমরা কাজ চালাচ্ছি। যদিও সঠিক সময়ে কাজ সম্পন্ন করতে বিদ্যমান শ্রমিকদের ওভারটাইম দিতে হচ্ছে। এরই মাঝে লকডাউনেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৬টি ইঞ্জিনের সিডিউল মেরামত কার্যক্রম শেষ করার পাশাপাশি সম্পন্ন করেছি মেরামতে আসা ২৫০টি ইঞ্জিনের কাজ। যদিও এসব কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে আমাদের শ্রমিকদের ওভারটাইম পরিশোধ করতে হচ্ছে তবুও অন্য খাতে খরচ সংকুচিত করে রেলের ব্যয়ও কমাচ্ছি। ’
এ প্রসঙ্গের উদাহারণ টেনে তিনি বলেন, ‘৩৬টি ইঞ্জিনে প্রতিবছর যন্ত্রাংশ বাবদ দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে এখন খরচ হচ্ছে কেবল ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। তবে নতুনভাবে শ্রমিক নিয়োগ হলে যেমন কাজের গতি বাড়তো তেমনি কাজের মানও।’
এদিকে লোকবল সংকট কাটাতে খুব শীঘ্রই রেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বলে পূর্বকোণকে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) সরদার শাহাদত আলী। তিনি বলেন, ‘খুব শীঘ্রই আমাদের লোকবল ২৭ হাজার থেকে ৪৭ হাজারে উন্নীত করা হচ্ছে। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ সংক্রান্ত যত কার্যক্রম তা শেষ করা হচ্ছে। আশা করছি বাকি দাপ্তরিক যে কর্মকা- আছে তা শেষ হয়ে গেলেই মাস খানেকের মধ্যেই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। আর নিয়োগের মাধ্যমে লোকবল সংকট মিটানো গেলে আমরা এখন যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি তার ৯০ শতাংশ সমস্যাই মিটে যাবে।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট