চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৭ অক্টোবর, ২০২০ | ১২:২৮ অপরাহ্ণ

২০১৮ সালের এপ্রিলে কর্ণফুলী নদীর ভাঙনরোধে ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপর প্রকল্প আর এগোয়নি। অনেকটা আঁতুরঘরেই বন্দী হয়ে পড়েছিল। এখন আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে প্রকল্পটি। ইতোমধ্যেই টেকনিকেল কমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। দ্বিতীয় দফা পরিদর্শন শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর ডিপিপি প্রস্তুত করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পওর-২) নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর ভাঙনরোধে টেকনিকেল কমিটি বোয়ালখালী ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। নদী ও শাখা খাল পরিদর্শন করেছেন। দ্বিতীয় দফা পরিদর্শন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে টেকনিকেল কমিটি। এতে প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয়ও নির্ধারণ করে দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, পুরোনো প্রকল্পটির ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে কয়েক বছর আগে। এখন অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। সেই প্রকল্পটি কাটছাঁট ও ঘষাঁমাজা করেই নতুনভাবে প্রস্তুত করা হবে।
পাউবো সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) প্রণয়ন করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেয়া হয়। কর্ণফুলী নদীর বোয়ালখালী ও রাউজান অংশ এবং খালের ভাঙনরোধে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদের দিকনির্দেশনায় প্রকল্পটি নেয়া হচ্ছে। জানতে চাইলে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, নদী ও খালের ভাঙনে অনেক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বাজারসহ নানা স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উদ্বাস্তু হয়েছেন অনেক মানুষ। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত এ সমস্যা লাঘব করা আমার নির্বাচনী ওয়াদা ছিল। নদী ও বিভিন্ন খালের ভাঙনরোধে বড় প্রকল্প নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের অনুরোধ করেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্পটি জমা দেয়ার পর ৩১ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পের ডিপিপি প্রেরণ করা হয়েছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই প্রকল্পটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছিল। নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে ভাঙনরোধে ছোট প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল। নির্বাচনের পর ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্পটি আঁতুড়ঘরে আটকে পড়ে থাকে।
পাউবো জানায়, কর্ণফুলী নদীর বোয়ালখালী অংশের চরণদ্বীপ ঘাটিয়ালপাড়া সংলগ্ন এলাকা, বোয়ালখালী খালের ননাইয়ারমার ঘাট, দুমুখো খাল, ছন্দরিয়া খালের বিনয় বাঁশী জলদাসের বাড়ি এলাকাসহ ৭টি পয়েন্টে নদী ও খালের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে মানুষের ঘরবাড়ি, জমা-জমি। নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। বোয়ালখালীর বিভিন্ন অংশে ৭ প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
বোয়ালখালীর ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণে কর্ণফুলী নদী-খাল বিধৌত। পূর্বে পাহাড় শ্রেণি। নদী এবং খালের তীব্র ভাঙন বোয়ালখালীবাসীর প্রধান সমস্যা। নদী ভাঙন ভোটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে রাজনৈতিক নেতারা। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ভাঙনরোধ বেমালুম ভুলে যান বিজয়ীরা।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট