নগরীর খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের অভিযানের পর পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রেখেছে আড়তদাররা। গতকাল রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) অভিযানের পর আজ সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আড়ত বন্ধ রেখে সড়কে বিক্ষোভ করছেন তারা।
আড়তদারদের দাবি, আড়তদাররা কমিশনে পেঁয়াজ বিক্রি করেন বিধায় দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমদানিকারকদের বেঁধে দেয়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি বিক্রি করেন তারা। সেহিসেবে দাম বৃদ্ধির জন্য আড়তদারদের জরিমানা করা অযৌক্তিক হলেও জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে অনেক আড়তদারকে জরিমানা করছে।
ব্যবসায়ীদের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক বলেন, অভিযানের সময় আড়তদারদের কাছে আমদানিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কত পড়েছে আর তারা কত বিক্রি করছেন সেইসব কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়। তারা বিক্রির কাগজপত্র দেখালেও আমদানির কোনও কাগজপত্র আমাদের দেখাতে পারেনি। তাই তাদের জরিমানা করা হয়েছে।
ওমর ফারুক বলেন, আড়তদারদের দাবি, আমদানিকারক তাদের যত টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বলেছে তত টাকা করেই তারা পেঁয়াজ বিক্রি করছে। কিন্তু আমদানিকারক যে তাদের বিক্রি করার নির্দেশ দিয়েছেন এর পক্ষেও তারা কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এর মানে দাঁড়ায় আমদানিকারক ও আড়তদার একই লোক। না হয় তাদের কাছে আমদানিকারকের লিখিত নির্দেশনা থাকবে না কেন? আমরা সব আড়তদারকে বলে দিয়েছি আমদানি ও বিক্রির তথ্য দোকানে রাখতে। দুটো দেখে আমরা বুঝবো তারা দাম বাড়িয়েছে কিনা। তারা যদি কাগজপত্র না রাখে, তাহলে আমরা ধরে নেব তারা অতিরিক্ত লাভের আশায় দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আর কাগজপত্র দেখাতে না পারলে আমরা আগামীতেও অভিযান চালিয়ে জরিমানা করব।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, সংগঠন থেকে কোনো ধরনের কর্মসূচি দেয়া হয়নি। জরিমানার শিকার ব্যবসায়ীরা আড়ত বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন। পরে তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অন্য আড়তগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন পেঁয়াজ আমদানির কাগজপত্র দেখতে চাইলেও বাস্তবতা হল আমদানিকারকরা আমাদের কোনও ধরনের কাগজ দেন না। তারা মৌখিক নির্দেশ দিয়ে ট্রাকে মাল পাঠিয়ে দেন। দাম বাড়ানোর সঙ্গে তারাই জড়িত। আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আর ঝামেলা তৈরি হবে না।
উল্লেখ্য, ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে দু’দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে বেড়ে যায়। পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে জেলা প্রশাসন খাতুনগঞ্জে অভিযান চালিয়ে রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দাম নিয়ে কারসাজির অভিযোগে ১০ আড়তদারকে জরিমানা করে। এর প্রতিবাদে আড়তদাররা আজ সোমবার সকাল থেকে আড়ত বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন। এ সময় প্রশাসন নমনীয় না হওয়া পর্যন্ত তারা পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
পূর্বকোণ/আরপি