চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

বিলবোর্ডের সেই মনসুরকে আবারো রাজস্ব বিভাগে বদলি

ইফতেখারুল ইসলাম

৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ২:১০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের(চসিক) রাজস্ব বিভাগে বদলি নিয়ে হ য ব র ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার পদ আছে একটি। কিন্তু পদায়ন করা হয়েছে দুইজনকে। অপরদিকে, গ্রেডেশন লিস্টে নাম না থাকা সত্ত্বেও একজন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাকর্মীকে উপকর কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। তাতে জ্যেষ্ঠ কর আদায়কারীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
চসিক সূত্র জানায়, বিলবোর্ড কেলেঙ্কারির দায়ে সাইনবোর্ডের প্রধান পরিদর্শক আবুল মনসুরকে তার মূল পদ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মী হিসেবে বদলি করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন তার মূল পদে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট তাকে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়। কিন্তু চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ তাকে গ্রহণ করেনি। এদিকে, রাজস্ব বিভাগের বঞ্চিতদের প্রশ্ন স্বাস্থ্য বিভাগ যাকে গ্রহণ করেনি, তাকে কেন রাজস্ব বিভাগে দেয়া হবে। এক সময় সাইনবোর্ডের দায়িত্বে থাকা আবুল মনসুরের প্রচুর বদনাম ছিল। এই শহরকে বিলবোর্ডের জঞ্জালে পরিণত করার অনেকখানি দায় তার উপর বর্তায়। একারণে তাকে সাইনবোর্ড থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগের পরিকল্পনা কর্মী আবুল মনসুরকে স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কোন ধরনের আলোচনা না করে। কিন্তু গত ১ সেপ্টেম্বর সেই বদলির আদেশ বাতিল করে রাজস্ব বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে উপকর কর্মকর্তা পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে বদলি করা হয়। চসিকের সচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই বদলি করা হয়। গ্রেডেশন লিস্টে নাম না থাকা সত্ত্বেও একজন পরিবার পরিকল্পনাকর্মীকে উপকর কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি দেয়ার কারণে জ্যেষ্ঠ কর আদায়কারীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানতে চাইলে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, বিলবোর্ড নিয়ে অভিযোগ উঠার পর তাকে তার মূল পদ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাকর্মী হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি চাকুরিতে অনিয়মিত ছিলেন। নবনিযুক্ত প্রশাসক দায়িত্ব নেয়ার কয়েকদিন আগে আবুল মনসুর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পদোন্নতি পান। কিন্তু আমি তাকে গ্রহণ করিনি। কারণ তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ে কিছুই জানেন না। এধরনের একজন ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিয়োগ দিলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। তাই তাকে নিইনি।
এদিকে, চসিকের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার পদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এখানে পদ আছে একটি। এই পদে দীর্ঘ দিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এখলাছ উদ্দিন আহমদ। তাকে গত ১২ আগস্ট উপকর কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। সেই পদে কর কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে পদায়ন করা হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর এখলাছ উদ্দিনের সেই বদলির আদেশ বাতিল করা হয়। গত বুধবার তিনিও ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন। এখন এই পদে দুইজন কর্মকর্তা আছেন। অথচ পদ আছে একটি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে এখলাছ উদ্দিন আহমদ পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমার আগের বদলি আদেশ যেহেতু বাতিল করা হয়েছে গত বুধবার আমি এস্টেট অফিসার হিসেবে যোগদান করেছি।’ রাজস্ব বিভাগের আরেক কর্মকর্তাকে এস্টেট অফিসার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে কিন্তু পদ আছে একটি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কর্তৃপক্ষ দেখবে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, আমি যতটুকু জানি এখলাছ উদ্দিন আহমদ সহকারী এস্টেট অফিসার হিসেবে যোগদান করেছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মর্তা আবুল মনসুরের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট