চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

হঠাৎ আইসিইউতে রোগীর চাপ

ইমাম হোসাইন রাজু

২৬ আগস্ট, ২০২০ | ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর সাধারণ শয্যার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর আইসিইউ শয্যাতে ছিল রোগীদের তীব্র চাপ। যদিও গেল জুন মাসে এসে এসব হাসপাতালগুলোর আইসিইউ শয্যা প্রায় ফাঁকা হয়ে পড়ে। রোগী সুস্থতার হার বাড়ায় ওই সময়ে অর্ধেকের বেশি শয্যা খালি থাকে। কিন্তু মাসের ব্যবধানে এসব আইসিইউ শয্যাতে পুনরায় বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি আইসিইউ শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।

চিকিৎসকরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের অনেকের মধ্যে ফুসফুস ও কিডনিজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি করোনায় পজেটিভ হওয়া এসব রোগীদের মধ্যে পূর্ব থেকেই অন্য কোনো রোগে ভোগা রোগীদেরও অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় তাদের আইসিইউতে ভর্তি দিতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় জটিল রোগে ভোগা ব্যক্তিদের করোনা পজেটিভ আসলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ চিকিৎসকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোভিড চিকিৎসায় চট্টগ্রাম নগরীতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে ২৬টি। যার মধ্যে আইসিইউ শয্যা রয়েছে এমন সংখ্যা মাত্র ১৪ টি’র। এ ১৪টি হাসপাতালের কাগজে কলমে আইসিইউ শয্যা রয়েছে সব মিলিয়ে ১৩৭টি। যদিও বাস্তবে তা অনেক কম। ১৩৭টি আইসিইউ’র শয্যা থাকলেও রোগীদের চিকিৎসা দেয় এমন সংখ্যা অর্ধেকের কম। আর তাতে বর্তমানে ৮০ শতাংশের বেশি রোগী ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। যদিও সপ্তাহখানেক আগেও এসব আইসিইউ শয্যায় রোগীর সংখ্যা অর্ধেকের মতো ছিল। শুধু তাই নয়, মাস খানেক আগেও অর্ধেকের কম রোগী ছিল এসব শয্যায়। তবে গেল এক সপ্তাহ’র ব্যবধানে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।
রোগী বাড়ার কারণ জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পূর্বকোণকে বলেন, ‘জুলাই মাসে এসে সাধারণ শয্যার পাশাপাশি আইসিইউতেও রোগীর সংখ্যা কমে গিয়েছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। মূলত করোনার পাশাপাশি যারা অন্য রোগে ভুগছিলেন, হঠাৎ তাদের সমস্যা তীব্র হচ্ছে। বিশেষ করে ফুসফুস ও কিডনী জটিলতায় ভোগা রোগীরাই এ পরিস্থিতির শিকার। তাই এ বিষয়ে সকলকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে এসব রোগীরা যেন দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়।’
এদিকে, করোনার সাথে অন্য রোগীরা যেন হাসপাতালে ভর্তি হয়, এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন স্বাস্থ্য বিভাগও। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর পূর্বকোণকে বলেন, ‘অনলাইন মিটিংয়ে এ বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যেন এসব জটিল রোগীরা দ্রুত হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নেয়। হয়তো দু’একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে সার্কুলারও আসবে। তাছাড়া যারাই এসব সমস্যায় ভুগছেন, তাদের বেশিরভাগই ৫০ উর্ধ্ব বয়সী। তাই এ বয়সের সকলকে বিষয়টি নিয়ে বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ এ চিকিৎসকের।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট