চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ছবি: শরীফ চৌধুরী

চান্দগাঁওয়ে জোড়া খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ আগস্ট, ২০২০ | ১:০৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর চান্দগাঁও থানা পাঠানিয়া গোদা এলাকায় সোমবার (২৪ আগস্ট) রাতে মা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। নিহতের শরীর ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নিহত মহিলার নাম গুলনাহার বেগম (৩৩) ও শিশুপুত্রের নাম রিফাত (৮)। গুলনাহার বেগম স্বামী পরিত্যক্তা। ময়ূরী নামে ১৪ বছর বয়সী আরেকটি মেয়ে রয়েছে মহিলার। গার্মেন্টে কাজ করেন ময়ূরী। পাঠানিয়া গোদা এলাকার রমজান আলী সেরেস্তাদারের বাড়ির মহিউদ্দিনের ভাড়া বাসায় বসবাস করে তারা।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার বিজয় বসাক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দিনের যেকোন সময় মা ও শিশুপুত্রকে হত্যা করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে।’ তিনি বলেন, ‘নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কাচের প্লেট দিয়ে আঘাত করে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নূরনাহার বেগমের ১৪ বছর বয়সী ময়ূরী প্রতিদিনের মতো সোমবারও গার্মেন্টে চাকরিতে যান। সন্ধ্যা ৭টায় বাসায় এসে দেখতে পান মা ও ভাইয়ের মরদেহ বাসার পড়ে রয়েছে। দুই রুমের বাসাটি থেকে পুলিশ মা ও শিশুপুত্রের লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের মেয়ে ময়ুরী বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে চাকরিতে যাই। সন্ধ্যায় এসে দেখি ঘরের বাথরুমে মায়ের ও রান্নাঘরে ভাইয়ের লাশ পড়ে রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, নূরনাহার বেগম স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা। এক ব্যক্তি তাকে বোন সম্বোধন করে প্রায়শই বাসায় যাতায়াত করেন। পুলিশ এখন তাকে খুঁজছে।

ঘর থেকে পুলিশ ভাঙা প্লেটের রক্তমাখা টুকরো উদ্ধার করেছে। নিহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলায়ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, কাচের প্লেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

বাসার মালিক মহিউদ্দিন বলেন, ‘দিনের বেলায় আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি। সন্ধ্যায় মেয়ে এসে চিৎকার করলে আমরা গিয়ে মা ও ছেলের লাশ দেখতে পাই। তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাসা ভাড়া নেয় তারা। মাসে ভাড়া ৭ হাজার। মা গুলনাহার, মেয়ে ময়ূরী ও ছেলে রিফাত ছাড়াও আরও একটি যুবক ওই বাসায় থাকত। ওই যুবককে ভাই হিসেবে পরিচয় দিতেন নিহত গুলনাহার বেগম।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, পুরাতন চান্দগাঁও রমজান আলী সেরেস্তাদারের বাড়ি এলাকায় মা ও ছেলে খুন হয়েছে। কেন বা কারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে বিস্তারিত এখনো জানানো যায়নি।

পুলিশ জানায়, ‘গুলনাহারের স্বামী আরেকজনকে বিয়ে করেছে। স্বামীর সঙ্গে থাকে না। গুলনাহার বাসায় ও হোটেলে রান্নার কাজ করে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। ছেলে রিফাতের গলায় কাটা দাগ আছে। ভোতা কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

পুলিশ জানায়, গুলনাহারের মেয়ে ময়ূরী পোশাক কারখানায় চাকরি করে। রাতে কারখানা থেকে ফিরে তার মায়ের মৃতদেহ বাথরুমে এবং ভাই রিফাতের মৃতদেহ রান্নাঘরে দেখতে পায়। এসময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। পুলিশ খবর পেয়ে মা ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এক যুবকের আসা-যাওয়া রয়েছে ওই বাসায়। তাকে খুঁজে পাওয়া গেলে মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন হবে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট