চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২

করোনায় ৬ মাস পিছিয়ে মেগা প্রকল্পের কাজ

মোহাম্মদ আলী

২০ আগস্ট, ২০২০ | ১২:৪২ অপরাহ্ণ

করোনায় পিছিয়ে গেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ এর কাজ। গত জুনে এটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিকরা কাজে যোগ না দেওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

ওয়াসার এ যাবতকালের বাস্তবায়নকৃত সবচেয়ে মেগা প্রকল্প কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের জাইকার যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটিতে কাজ করেন জাপানি ৮ বিশেষজ্ঞ। কিন্তু করোনার শুরুতে ৫ বিশেষজ্ঞ দেশে ফিরে যান। কিন্তু ফ্লাইট বন্ধ থাকায় তারা বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না। নিজ দেশে আটকা পড়েছেন তারা। বর্তমানে অবশিষ্ট তিন জাপানি বিশেষজ্ঞ প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া শ্রমিকরাও করোনা আতঙ্কের কারণে কয়েক মাস কাজে যাননি। ফলে প্রকল্পের কাজ চলে ধীরগতিতে। এতে যথাসময়ে প্রকল্পটি উৎপাদনে যেতে পারেনি।
চলতি বছরের জুনে প্রকল্পটি চালু করতে পুরোদমে কাজ করে ওয়াসা। কিন্তু করোনার কারণে মার্চ থেকে কয়েক মাস প্রকল্পের কাজ অনেকটা বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে কিছু কিছু কাজ শুরু করা হলেও প্রকল্পের বড় কাজগুলো বন্ধ ছিল। বিশেষ করে রাঙ্গুনিয়ার পোমরা এলাকায় প্রকল্পের টিট্রমেন্ট প্ল্যান্টে কাজ অনেকটা বন্ধ থাকে। শ্রমিকরা করোনার আতঙ্কে বাড়ি ফিরে যান। অবশ্য শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ায় এখন প্রকল্পের কাজ চলছে পুরোদমে।

ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৮০শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। প্রকল্পটি উৎপাদনে গেলে ওয়াসার পানি সরবরাহ বাড়বে দৈনিক আরো ১৪ কোটি লিটার। বর্তমানে দৈনিক ৩৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা।

কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-১ ও মদুনাঘাট প্রকল্প চালুর পর মেগা প্রকল্পটি গ্রহণ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেইজ-২ নামের প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে এটিই হবে প্রতিষ্ঠার ৫৬ বছরের মধ্যে ওয়াসার সবচেয়ে বড় প্রকল্প। জাপানের জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪ শত ৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা ৩ হাজার ৬ শত ২৩ কোটি ২৮ লাখ, বাংলাদেশ সরকার ৮ শত ৪৪ কোটি ৮০ লাখ এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার তহবিল থেকে ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে। নগরীতে বর্তমানে ওয়াসার পানি চাহিদা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু ওয়াসা সরবরাহ করতে পারে প্রায় ৩৬ কোটি লিটার। কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেইজ-২ চালু হলে উৎপাদন বাড়বে আরো ১৪ কোটি লিটার। তাতে নগরীর পানি সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে বলে আশা করছেন ওয়াসার কর্মকর্তারা।

কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেইজ-২ এর পরিচালক ও ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীর রাঙ্গুনিয়া সরফভাটা থেকে পানি উত্তোলন করে পরিশোধনের পর চট্টগ্রাম শহরে সরবরাহ করা হবে। তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে প্রকল্পটির কাজ যথাসময়ে করা যায়নি। এছাড়া করোনা আতঙ্কে শ্রমিকরা প্রথম কয়েক মাস কাজে যায়নি। পরবর্তীতে যোগদানের পর কাজে গতি এসেছে। আমরা আশাবাদী চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি উৎপাদনে যাবে।’
পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট