চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

চিটাগাং চেম্বারে ওয়েবিনারে বক্তারা

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে চামড়া শিল্পে বাংলাদেশ মূল্য নির্ধারক নয়

বিজ্ঞপ্তি

২৯ জুলাই, ২০২০ | ১০:১৫ অপরাহ্ণ

দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই)’র ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স (বিসিই) এর উদ্যোগে করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ‘সার্ভাইভিং দ্যা প্যানডেমিক’ ধারাবাহিক আলোচনার বিশেষ পর্বে ‘এনিমেল হাইডস এন্ড লেদার বিজনেস ভেল্যু চেইনঃ চ্যালেঞ্জ এন্ড অপরচ্যুনিটিস’ শীর্ষক এক ওয়েবিনার সম্প্রতি সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চেম্বার সভাপতি ও বিসিই’র চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মন্জুর, বাংলাদেশ টেনার্স এসোসিয়েশন’র চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ এবং চেম্বার সেক্রেটারি ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিসিই এর প্রধান নির্বাহী ওয়াসফি তামিম।

চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, কাঁচা চামড়া এবং চামড়া ব্যবসার ভেল্যু চেইন গত বছর অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। তিনি এ বছর যাতে একই রকম পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। সরকার কাঁচা চামড়ার মূল্য গত ঈদ-উল-আযহার চাইতে কিছুটা হ্রাস করে নির্ধারণ করেছে। গত বছর যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল তা থেকে উত্তরণে সরকার কাঁচা চামড়া এবং ওয়েট ব্লু লেদার রপ্তানির শর্তসমূহ কেইস বাই কেইস শিথিল করার বিষয় বিবেচনা করছে।

এ প্রেক্ষিতে আলোচকগণ যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কাঁচা চামড়া এবং চামড়া শিল্পে বাংলাদেশ মূল্য নির্ধারক নয়। কাজেই অভ্যন্তরিণভাবে আমরা যে মূল্য নির্ধারণ করি বিশ্ব বাজারে তার কোন গুরুত্ব নেই। সারা বিশ্বে চামড়ার চাহিদা গত কয়েক বছরে অনেক কমে গেছে এবং সেই সাথে বাংলাদেশের রপ্তানিও হ্রাস পেয়েছে। কাঁচা চামড়ার মানের নিম্নমুখীতা, অদক্ষ লোকবল ধারা চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, এলডব্লিউজি প্রত্যায়নের অনুপস্থিতিতির কারণে বিশ্ব বাজারে যেটুকু মার্কেট রয়েছে তা বাংলাদেশের সদ্ব্যবহারের সুযোগ অনেক কম।

সর্বোপরি, গত বছরের অবিক্রিত চামড়ার স্টক, বছরের ৪০-৫০% চামড়া কেবলমাত্র ঈদ-উল-আযহাতে সংরক্ষণ করা, এ শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থের যোগানের অভাব ইত্যাদি কারণে স্বল্প সময়ে এত বিশাল পরিমাণে চামড়া সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ অত্যন্ত কঠিন। করোনা পরিস্থিতি থেকে কতদিনে উত্তরণ সম্ভব তার উপর অভ্যন্তরীণ চাহিদা নির্ভরশীল। তথাপি এ শিল্পে বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বিপুল পরিমাণ কাঁচা চামড়া সরবরাহ অবশ্যই তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখে যেখানে রপ্তানি খাতে ৭০-৮০% স্থানীয়ভাবে মূল্য সংযোজন করা সম্ভব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তার যথাযথ ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি এবং বর্তমানে এ শিল্প অস্তিত্বের প্রশ্নের সম্মুখীন।

আলোচকগণ এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদী, সমন্বিত ও ইতিবাচক পদক্ষেপের আহবান জানান। যার মধ্যে পরিকল্পিত কসাইখানা নির্মাণ, টেনারীগুলোকে নিজস্ব ইটিপি স্থাপনে অনুমতি প্রদান, সিইটিপি এর যথাযথ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা এবং স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা উল্লেখযোগ্য।

বক্তাগণ কুরবানি দাতাদেরকে সতর্কতার সাথে চামড়া ছাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে চামড়া সংরক্ষণের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণে যৌক্তিক মূল্যে লবণ সরবরাহ এবং টেনারী মালিকদেরকে চামড়া সংগ্রহে নগদ অর্থায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

 

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট