চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ফ্রিপোর্ট থেকে সিমেন্ট ক্রসিং

৫ মিনিটের পথ ‘ঘণ্টা পার’

ইমরান বিন ছবুর

২৮ জুলাই, ২০২০ | ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

নগরীর ফ্রিপোর্ট থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত সড়কে প্রতিদিন অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই যানজটের প্রভাবে সিমেন্ট ক্রসিং সড়কের উভয় পাশের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে সড়ক ব্যবহারকারীরা। ফ্রিপোর্ট থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত পাঁচ মিনিটের দূরত্বের সড়কে এখন ঘণ্টার চেয়েও বেশি সময় লাগছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের কারণে মূলত এই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান চালকরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (ফ্লাইওভার) কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজের জন্য ভারী যানবাহন ব্যবহারের ফলে সড়কের এই বেহাল দশা (অসংখ্য গর্ত) হয়েছে। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজের জন্য রাস্তার কোন ক্ষতি হয়নি বলে দাবি প্রকল্প পরিচালকের।
সম্প্রতি দেখা যায়, ফ্রিপোর্ট থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে দুপুর গড়ালেই শুরু হয় যানজট। বিকেল হতে হতেই সড়কের উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। ফ্রিপোর্ট থেকে সল্টগোলা ক্রসিং, অন্যদিকে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাটগড় ও বিমান বন্দর সড়কের বিএফ শাহীন কলেজ পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পানি জমে থাকা ও ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে সড়কের উভয় পাশে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ‘এক পা, দু’পা’ করে গাড়ি সামনে এগোচ্ছে। ফলে দীর্ঘ সময় জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
জানতে চাইলে মাহিন্দ্র ট্যাক্সি চালক মো. আব্দুর রহমান জানান, আগে আমাদের গাড়ি ফ্রিপোর্ট থেকে বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত চলতো। এখন যানজটের কারণে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত যাতায়াত করতে হচ্ছে। এরপরও যানজটের কারণে গাড়ি চালাতে পারছি না। আগে যেখানে দৈনিক ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা ইনকাম হতো, এখন সেখানে ৫০০-৬০০ টাকাও ইনকাম হচ্ছে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি নিয়ে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।

কাটগড় এলাকার মো. সাইফুল করিম নামের চট্টগ্রাম ইপিজেডের এক চাকুরেজীবী জানান, প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে অফিস যাতায়াত করি। সাম্প্রতিক সময়ে খুব ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে ফ্রিপোর্ট পর্যন্ত এক ঘণ্টা লাগছে। আগে যেখানে সময় লাগতো মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিট। ফ্লাইওভারের কাজ চলায় সড়কের মাঝ অংশে ঘেরা-বেড়া দেয়া হয়েছে। এছাড়া, সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের উভয়পাশে পানি জমে যায়। ফলে যান চলাচলের কোন উপায় নেই।

সিমেন্ট ক্রসিং এলাকার ব্যবসায়ী মো. কাশেম জানান, সিমেন্ট ক্রসিং থেকে ফ্রিপোর্ট এলাকা এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ যানজটে আটকা পড়ছে। কোথাও যে সঠিক সময়ে যাবে তার উপায় নেই। এভাবে তো চলা যায় না। এর জন্য একটা ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

জানতে চাইলে সিডিএ’র প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, সিডিএ’র নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে যানজট কিংবা রাস্তার কোন ক্ষতি হয়নি। এই রাস্তা আগে থেকেই খারাপ ছিল। এছাড়া, বন্দরের ভারী গাড়িগুলো এই সড়ক ব্যবহার করে। ফ্লাইওভারের কাজের জন্য ব্যবহৃত গাড়ির ওজন খুব বেশি না। এই রাস্তার মানও খুব একটা ভালো ছিল না। তাই এত তাড়াতাড়ি সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট