চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার

মসলার বাজারে ‘সুবাতাস’

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

২৭ জুলাই, ২০২০ | ২:১৫ অপরাহ্ণ

করোনা সংক্রমণের পর থেকেই খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম ক্রমান্বয়ে কমতির দিকে রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষেও মসলার দাম নাগালে রয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এলাচি ও আদা ছাড়া সব ধরনের মসলার দাম আগের তুলনায় আরও কমেছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। কিন্তু চলতি বছরের চিত্র উল্টো। কোরবানির অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মসলার দরপতন অব্যাহত রয়েছে পাইকারিতে। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ববাজারে দাম বাড়তি থাকার পর পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে দাম কমতির দিকে রয়েছে। কারণ করোনার প্রভাবে বেচাকেনা খুবই কম।

মসলা আমদানিকারক চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমদানিকারকেরা লোকসানের কারণে কয়েকদিন এলাচি বাজারে ছাড়েনি। তাই এলাচির দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে গতকাল বিকেল থেকে এলাচি সরবরাহ বাড়ায় দাম স্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। বাজারে ক্রেতা কমে আসায় মসলাজাতীয় পণ্যের দাম কমতির দিকে রয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েনি। দাম বাড়তি রয়েছে।

খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গুয়েতেমালা থেকে আমদানি করা ভালোমানের এলাচি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৫৫০ টাকা দরে। গেল সপ্তাহে তা ২৪’শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। মধ্যমানের এলাচি বিক্রি হচ্ছে ২৪৯০ টাকা ও ২২১০ টাকা দরে। এই দুই ধরনের এলাচির দামও কেজিতে একশ টাকা বেড়েছে।

ভারতীয় আমদানি করা জিরার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। কেজিপ্রতি ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সিরিয়া থেকে আমদানি করা জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩২৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তা ৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মিষ্টি জিরা ৯০ টাকা থেকে কমে ৮৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভারতীয় আমদানি করা লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬২০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তা ৬৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। জাইফল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৪৫০ টাকা দরে। দারুচিনি বিক্রি করা হয়েছে কেজিতে ২৫৫-২৫৮ টাকা দরে। গত সপ্তাহে পণ্যটি বিক্রি হয়েছিল ২৬০ টাকা দরে। যত্রিক বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২১৫০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তা ২২৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩৫৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তা ৩৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ধনিয়া মানভেদে কেজিতে ৬৫-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে তা বিক্রি হয়েছিল ৬৫ টাকা দরে।

ভারত থেকে আমদানি করা লাল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা থেকে কমে ১৫২-১৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মরিচের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১২৫ টাকা দরে।

তবে রসুনের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়েছে পাইকারিতে। ভারতীয় আমদানি করা ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ২৩-২৩ টাকা। গেল সপ্তাহে তা ২০-২১ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। চায়না থেকে আমদানি করা ভালো মানের রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা দরে। তবে আদার দাম বেড়েছে। চায়না থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১৪০-১৪৫ টাকা দরে। গেল সপ্তাহে তা ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা। তা বিক্রি হয়েছিল ৯০-৯৫ টাকা দরে।

খাতুনগঞ্জের আড়তদার জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘আদার আমদানি কম থাকায় দাম একটু বেড়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে।’

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, করোনার প্রভাবে ঈদুল আজহায় মসলাজাতীয় পণ্যের প্রভাব পড়বে না। বেচাকেনা কম থাকায় প্রতিটি পণ্যের দাম কমতি রয়েছে।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট