চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

লামায় নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা, প্রশাসন নিরব!

সংবাদদাতা লামা

২৫ জুলাই, ২০২০ | ৮:০৪ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের লামা উপজেলার লামা-চকরিয়া সড়কের পাশে পাঁচ মাইল (কুমারী) নামক স্থানে প্রকাশ্যে স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটচ্ছে। গত এক মাস ধরে “হোমল্যান্ড প্ল্যান্টার্স” নামে একটি কোম্পানি এই পাহাড় কাটা হলেও প্রশাসনের কেউই বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন। বলা যায় অনেকটা নিরব ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন কাজে পাহাড়-টিলা কাটা বা অন্য কোনো উপায়ে ভূমিরূপ পরিবর্তন করা যাবে না বলে আইনে বিদ্যমান থাকলেও শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ‘হোমল্যান্ড প্ল্যান্টার্স’ নামে একটি কোম্পানি প্রকাশ্যে স্কেভেটর দিয়ে বাগানের রাস্তা করার নামে ব্যক্তিগত ৬/৭টি পাহাড় কাটচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬/৭ পাহাড়ের অর্ধেক কেটে ফেলা হয়েছে। এসময় স্কেভেটর সহ ২০/২৫ জন শ্রমিক পাহাড় কেটে পিকআপে মাটি ভরছিলেন। পাহাড় কাটার কাজে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে আলাপকালে জানা যায় কাটা ৬/৭টি পাহাড় ছাড়াও আরো ২/৩টি পাহাড় কাটা হবে।

লামা-চকরিয়া মেইন সড়ক দিয়ে প্রতিদিন লামা উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা যাওয়া আসা করেন। মেইন রোড় দিয়ে গেলেই পাহাড় কাটা দেখা যায়। রাস্তা পাশে গেলেই চোখে পড়ে বিশাল বিশাল পাহাড়গুলোর অধিকাংশ কাটা হয়েছে।

হোমল্যান্ড প্ল্যান্টার্স বাগানের কেয়ারটেকার মো. সাইফুল বলেন, ‘বিষয়টি সবাই জানে। সবাইকে ম্যানেজ করে আমরা পাহাড় কাটার কাজ শুরু করেছি। বাগানের মালিক তারিক আহমদ আমেরিকায় থাকেন। সেখান থেকে তিনি সব কিছু পরিচালনা করেন। বাগানের মূল দায়িত্ব আছেন সুজিত সাহেব। সুজিত এর সাথে যোগাযোগ করতে নাম্বার চাইলে সাইফুল আরো বলেন, তার নাম্বার দেয়া যাবেনা। আপনারা কিছু জানতে চাইলে লামার শীর্ষ কর্মকতাদের সাথে কথা বলেন।’

লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘পাহাড় কাটার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখব।’

লামা উপজেলা পরিবেশ রক্ষা পরিষদের সভাপতি মো. তৈয়ব আলী বলেন, জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় অবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধ করা উচিত। যাঁরা পাহাড় কাটছেন, ফৌজদারি আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা দরকার। তাহলে এলাকায় বিষয়টি দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে।

জানতে চাইলে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি বদলি জনিত কারণে রোববার লামা উপজেলা হতে চলে যাচ্ছি। নতুন ইউএনও মো. রেজা রশিদকে বিষয়টি বলে যাবো। যারা পাহাড় কেটেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।’

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান জেলার সহকারী পরিচালক সামিউল আলম কুরসি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পূর্বকোণ /রফিকুল- আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট