চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সাগরিকা পশুর হাট

প্রস্তুত বাজার, ক্রেতার অপেক্ষায় বেপারি

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১৭ জুলাই, ২০২০ | ১:৪২ অপরাহ্ণ

সাগরিকা বাজারে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বেপারি ও খাইন দখলদাররা। চলছে শেড মেরামত ও সংস্কারের কাজ। এটি চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় গরুর বাজার। কোরবানিতে সবচেয়ে বেশি গরু বেচাকেনা হয় এ হাটে। যোগাযোগব্যবস্থা ও পরিবেশ ভালো থাকায় ঈদুল আজহায় বেপারি, কোরবানিরা এখানে কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
ইজারাদার সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর বলেন, কোরবান উপলক্ষে ৫০-৬০ হাজার পশু বেচা-বিক্রি হয়। কুষ্টিয়া, চাপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, যশোর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারি ও খামারিদের গরু বেশি আসে। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো থাকায় বেপারি-খামারি ও ক্রেতারা এখানে নিরাপদ মনে করেন। তিনি বলেন, এখন সীমিত আকারে গরু আসছে। তবে কোরবানের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে গরু আসা শুরু হয়। এবারও কোরবানির চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে গরু আসা শুরু হবে।

কথা হয় কুমিল্লার রহিম মিয়া ও রাজশাহীর কামাল উদ্দিনের সঙ্গে। গরু রাখা ও বিক্রির জন্য শেড প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত তারা। বছরজুড়ে এখানে গরু বিক্রি করেন তারা। প্রতি কোরবানির ঈদে তিন-চারশ গরু বিক্রি করা হয়। এবারও তিন শতাধিক গরু আনার প্রস্তুতি রয়েছে। তবে গরুর দাম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। তারা বলেন, কোরবানের পর গরু কিনে এক বছর ধরে লালন-পালন করা হয় কোরবানির জন্য। গো-খাদ্যের দামবৃদ্ধির কারণে খরচ বেশি পড়ে। করোনাভাইরাসের কারণে ঈদুল ফিতরের মার্কেট জমেনি। মানুষ নতুন কাপড়-চোপড় কিনেনি। কোরবানির ঈদে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

চট্টগ্রাম-ঢাকা ট্র্যাঙ্ক রোড সংলগ্ন হওয়ায় সাগরিকা বাজারে ভালো যোগাযোগব্যবস্থা রয়েছে। চারদিকে গাড়ি চলাচলের প্রশস্ত সড়ক রয়েছে। এজন্য গরু বেপারি ও ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বাজারের পরিবেশও অন্যান্য বাজার থেকে অনেকটা ভালো রয়েছে। দেখা যায়, বাজারের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম কোণ, মাঝখানে পাকা সড়ক ও টিনশেড রয়েছে। তবে উত্তর, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বাংশে কাঁদা রয়েছে। বিভিন্ন অংশে সংস্কার ও খাইন নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে।

ইজারাদার বলেন, সাগরিকা বাজারকে ঘিরে আশপাশের অলিগলি, খালি মাঠ ও জায়গায় গরু বেচাকেনা হয়। খাইন (খুঁটি) পুঁতে গরু রাখার প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে চলে লাখ লাখ টাকার খুঁটি বাণিজ্য। প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসীরা প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খুঁটি বাণিজ্য করে আসছে।
সাগরিকা বাজারে লক্ষাধিক গরু বেচাকেনা হয়। কোরবানির পশু কেনাকাটা করতে আসে কয়েক লাখ মানুষ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অনেকটা কঠিন হবে বলে জানায় ক্রেতা-বিক্রেতারা।

ইজারাদার সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটার জন্য সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। আমরাও চেষ্টা করব। এখানে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক থাকবে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। এছাড়াও দূরত্ব বজায় রেখে খাইন বা খুঁটি স্থাপন করা হবে। দূরত্ব বজায় রেখে গরু বিক্রির জন্য বেপারিদেরও অনুরোধ করা হবে।

সাগরিকা গরুর বাজার চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এই পথ দিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় গরু পরিবহন করে। অভিযোগ উঠে, সিটি গেট থেকে এ কে খান দিয়ে নগরী ও জেলায় পরিবহনের সময় খাইন মালিকেরা জোর করে গরু বাজারে নিয়ে যায়।

গরু ব্যবসায়ী সমিতির মো. শাহজাহান বলেন, কোরবানির চাঁদ উঠার পর বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির পশু আসা শুরু হবে। জমে উঠবে বাজারগুলো।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট