চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পদ প্রত্যাশীদের দৌঁড়ঝাপ

শীঘ্রই আসছে চবি ছাত্রদলের নতুন কমিটি

চবি সংবাদদাতা

১৪ জুলাই, ২০২০ | ১২:৫২ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি শিগগিরই আসছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু দিয়েছে ছাত্রদলের নীতি-নির্ধারকেরা। সংগঠনের মধ্যে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে তরুণ, মেধাবী ও রাজপথের পরিক্ষিতদের দিয়ে কমিটি পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ বিষয়ে সোমবার (১৩ জুলাই) রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল পূর্বকোণ বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি অতি দ্রুত দেওয়া হবে। এ লক্ষে যাচাই-বাছাই চলছে। আশা করছি অল্প কিছু দিনের মধ্যে কমিটি দিতে পারব।’

জানা যায়, এবাবের নতুন নেতৃত্ব আসবে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যামে। ইতোমধ্যে আহ্বায়ক কমিটির প্রার্থী যাচাই-বাছাই শুরু করেছেন শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এ আহ্বায়ক কমিটিতে একজন আহ্বায়ক, একজন সদস্য সচিব, কিছু যুগ্ম আহ্বায়ক সহ একাধিক সদস্য স্থান পাবে।

দৌঁড়ঝাপে পদপ্রত্যাশীরাঃ

এদিকে নতুন কমিটি গঠনের গুঞ্জনে চবি ছাত্রদলের দীর্ঘদিন ধরে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে এ কমিটিতে পদ-পদবির দৌঁড়ের তদবিরে পিছিয়ে নেই অছাত্র ও বিভিন্ন মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরাও। এ নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বয়কের পদ পেতে চারজন প্রার্থী এগিয়ে আছেন। এদের মধ্যে আন্দোলন সংগ্রামে সব থেকে সক্রিয় নেতা বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মামুন উর রশিদ মামুন রয়েছেন। তিনি কারাবন্দী বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীর অনুসারী। এছাড়া আহ্বায়ক প্রার্থী হিসেবে আরো তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান, সহ-সভাপতি শাহাদাত খন্দকার ও মহসিন আলাউদ্দিন। সদস্য সচিব পদে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াসিন, আতাউর রহমান জিসান, হিসাম উদ্দিন, আবু বক্কর সিদ্দিক মাসুম, ইমরানুল হক, জসিম উদ্দিন ও প্রচার সম্পাদক মহিন উদ্দিন।

সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে দীর্ঘ ছয় বছর পর খোরশেদ আলমকে সভাপতি ও শহীদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে শাখা ছাত্রদলের ৬৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে ২০১৭ সালের ১৮ মে ২৪৩ জনের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সংসদ। অভিযোগ রয়েছে যাদের পদ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। আরো অভিযোগ রয়েছে, নতুন কমিটিতে ২৪৩ জনকে পদ দেওয়া হলেও বাস্তবে তাদের কোনো সক্রিয়তা নেই।

আবার দলের দুঃসময়গুলোতে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকলেও সংগঠনের পদ-পদবি পায়নি চবি ছাত্রদলের অনেক নেতা। এরমধ্যেও প্রথমদিকে অনেকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে মোটামুটি সক্রিয় ছিলো। কিন্তু এতে সহ্য করতে হয়েছে সরকারি ছাত্র সংগঠনের হামলা ও নির্যাতন। এরপরও কোনো প্রতিকার পায়নি। এভাবে মহাজোট সরকারের গত ১০ বছর নির্যাতন সহ্য করেও যখন ক্ষমতার পালাবদল হয়নি, তখন অনেকটা হতাশ হয়েই আন্দোলন থেকে ছিটকে পড়েছে চবি ছাত্রদলের বিগত সময়ের কিছুটা সক্রিয় ওই নেতারাও। আবার অনেকে নিজের শিক্ষাজীবন বাঁচাতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। তবে এবারের আহ্বায়ক কমিটিতে যেন দলের দুঃসময়গুলোতে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ও সংগঠনের জন্য নিবেদিত নেতাদের ঠাঁই দেওয়া হয় এমনটা প্রত্যাশা করছেন নেতাকর্মীরা।

চবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ। এ মাসে হয়তো নতুন আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু দিয়েছে ছাত্রদলের নীতি-নির্ধারকেরা। এক্ষেত্রে ত্যাগী ও সংগঠনের প্রতি নিবেদিতকর্মীদের মূল্যায়ন করবেন বলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল আমাদের জানিয়েছেন।’

সক্রিয় কর্মীদের মূল্যায়নের আশ্বাসঃ

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘বিগত ক্রাইসিস সময়গুলোতে য়ারা দলের জন্য কাজ করেছে, ছাত্রদলের নিবেদিত প্রাণ তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। তবে কোনোভাবে যাতে বির্তকিত, মাদাকাসক্ত ও অনুপ্রবেশকারীরা যাতে কমিটিতে না আসতে পারে সেদিকে আমরা আবশ্যই লক্ষ রাখবো।’

কত দিনের মধ্যে কমিটি দেওয়া হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ মাসে অথবা অন্য যেকোনো সময় কমিটি দেওয়া হতে পারে।’

ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে আসা কিংবা প্রকাশ্যে কর্মসূচিতে না থাকার বিষয়ে ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘শুধু চট্টগ্রাম বিশ্বিবিদ্যালয় নয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পাস কিংবা পরীক্ষার হল থেকে বের করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মীদেরকে মারধর-হামলা করেছে। বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেকে এসব ব্যাপারে অভিযোগ দিলেও তারা কর্ণপাত করে না। তারপরও আমরা থেমে থাকেনি। মার খেয়েও কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট