চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

“ঘরে বন্দি থাকতে চায় না মন”

ঘরের বন্দিদশা থেকে পার্কে ছুটছে মানুষ

নগরীর বিপ্লব উদ্যান ও সিআরবিতে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মত

ইমরান বিন ছবুর

১১ জুলাই, ২০২০ | ৪:০১ অপরাহ্ণ

দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রামসহ দেশের সব বিনোদন কেন্দ্র ও পর্যটন এলাকা। তখন থেকেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীসহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষ। দীর্ঘদিন বাসায় বন্দি থাকতে থাকতে একঘেয়েমি চলে এসেছে মানুষের মাঝে। এই একঘেয়েমি কাটাতে মানুষ দলে দলে ছুটতে শুরু করেছে উন্মুক্ত পার্কে।
গতকাল (শুক্রবার) নগরীর বিপ্লব উদ্যান ও সিআরবিতে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। সেখানে তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি দেখা গেছে শিশু-বৃদ্ধসহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর গড়িয়ে বিকেল শুরু হওয়ার আগেই মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেন বিপ্লব উদ্যানে। কেউ গলা ছেড়ে গান গাইছেন, কেউ কেউ বন্ধুদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত, শিশুদের দেখা যায় পার্কের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটতে। যুগলরা নিজের মত করে সময় কাটাতে ব্যস্ত। একই দৃশ্য দেখা যায় সিআরবি এলাকায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এখানে মানুষের ঢল নামতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
বিপ্লব উদ্যান পার্কের বেঞ্চে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন দুই বান্ধবী। কথা হলে তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী ফারিহা আক্তার জানান, ‘মানুষ এখন ঘরে বন্দি থাকতে থাকতে ক্লান্ত। গত ১৭ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। এরপর থেকে ঘরের বাইরে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে বিকেলবেলা ছাদে উঠতাম, কিছুদিন ধরে বাড়িওয়ালা কোন এক কারণে ছাদও বন্ধ করে রেখেছে। ফলে আমাদের মত শিক্ষার্থীরা অনেকটা গৃহবন্দি। কোথাও যাওয়ার জায়গাও নেই এখন। এভাবে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। তাই আজ (শুক্রবার) বান্ধবীকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে এসেছি।
তিনি আরও জানান, এভাবে আর কতোদিন বন্দি থাকতে হবে তাও কারো জানা নেই। এমনকি রমজানের ঈদে ঘর থেকে বের হইনি। অনেকদিন পর বাসা থেকে বের হয়ে ভালো লাগছে। পার্কে বাচ্চাসহ অনেক লোকজন এসেছে। সবাইকে দেখে অন্যরকম ফিলিং হচ্ছে।
সিআরবিতে চানাচুর-ঝালমুড়ি বিক্রি করতে আসা কামাল হোসেন জানান, এতদিন করোনার কারণে লোকজন দেখা যায়নি। তবে আজ শুক্রবার হওয়ায় প্রচুর লোকজন এসেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০-৮০০ টাকার ঝালমুড়ি বিক্রি হয়েছে।

বিপ্লব উদ্যানের ‘ডিস রেস্টুরেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মো. ইমাম হোসেন জানান, স্টাফদের বেতন দেয়ার জন্যই দোকান খুলেছি। তারা বারবার ফোন করে বিরক্ত করছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে এখানে লোকজন আসা শুরু করেছে। তবে খাওয়ার চেয়ে তারা আড্ডা দিচ্ছে বেশি। বেচাকেনা আগের চেয়ে অনেক কম। আপাতত কোন রকমে দোকান খরচ ও স্টাফদের বেতন দিতে পারলে বাঁচি।
আলমারাই এফসি নামের আরেক রেস্টুরেন্টের দোকানদার মো. শাহ জাহান বলেন, গত চার থেকে পাঁচদিন ধরে দোকান খুলছি। কাস্টমারের সংখ্যা খুবই কম। আগের তুলনায় কাস্টমার চার ভাগের এক ভাগে চলে এসেছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট