চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল

পিসিটিতে যেতে আরও দেড় বছর লাগবে

সারোয়ার আহমদ

১০ জুলাই, ২০২০ | ১২:৩৩ অপরাহ্ণ

মুজিব বর্ষেও শেষ হচ্ছে না বহুল কাঙ্ক্ষিত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) নির্মাণ কাজ। সব কাজ শেষ করে অপারেশনে যেতে সময় লাগবে আরও দেড় বছর। গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এই কন্টেইনার টার্মিনালের শেষ করার কথা থাকলেও তখন পর্যন্ত শেষ হয়েছিল ৪০ শতাংশ কাজ। এরপর মুজিব বর্ষে পিসিটি’র নির্মাণ কাজ শেষ করে অপারেশনে যাওয়ার সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করা হলেও নির্ধারিত সময়ে এই কাজ শেষ হচ্ছে না। মূলত করোনাভাইরাসের কারণে কাজের ধীর গতি এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মূল কারণ।

কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রসঙ্গে বন্দর সচিব ওমর ফারুক পূর্বকোণকে জানান, মুজিব বর্ষে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের কাজ শেষ করে অপারেশনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশে দেখা দিলে ক্রমশ সব ধরণের কাজে ব্যাঘাত ঘটে। সেই প্রভাব পিসিটি’র নির্মাণ কাজেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যে গতিতে পিসিটির কাজ চলছিল গত তিন মাসে তা কিছুটা ধীর গতিতে চলেছে। তাই ঠিক মুজিব বর্ষের মধ্যে পিসিটির কাজ শেষ করা যাবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত এর ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে পিসিটি অপারেশনে যাবে বলে আশা করা যায়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বের প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এই প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে বিআরটিসি ও বুয়েট। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে প্রকল্পের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে জুলাইতে কাজ শুরু করতে পারেনি। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ একাজের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর কাছে প্রকল্পের কাজ হস্তান্তর করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী মাস ফেব্রুয়ারি থেকে সেনাবাহিনী প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই চলে যায় ৬ মাস।

বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্পে রয়েছে ৩২ একর জায়গায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ জেটি। যেখানে ৩টি জাহাজ বার্থং করতে পারবে। এছাড়া থাকবে ২২০ মিটার দীর্ঘ একটি ডলফিন জেটি। এক লাখ ১২ হাজার বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ ইয়ার্ড এবং রাস্তা। ২ হাজার ১২৮ বর্গমিটার কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশন শেড (সিএফএস), ৬ মিটার উচ্চতার ১৭৫০ মিটার কাস্টমস বন্ডেড ওয়াল, ৫৫৮০ পোর্ট অফিস বিল্ডিং, ১২০০ বর্গমিটার যান্ত্রিক ও মেরামত কারখানা, ২৫০০ মিটার রেলওয়ে ট্রেক নির্মাণ, ৪২০ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ, ৪ লেন বিশিষ্ট শূন্য দশমিক ৭৫ কিমি. এবং ৬ লেন বিশিষ্ট ১ কিমি. রাস্তা স্থানান্তরপূর্বক পুনঃনির্মাণ, সিকউরিটি পোস্ট, গেস্ট হাউস, ফুয়েল স্টেশন এবং লেবার শেড।

এছাড়া টার্মিনাল পরিচালনা কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে থাকবে ২টি ফায়ার ট্রাক, ১টি ফায়ার কার, ৩টি নিরাপত্তা পেট্রোল কার, ১টি এম্বুলেন্স, ৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৪টি স্ট্রাডেল কেরিয়ার, ৪টি রিচ স্ট্যাকার, ৮টি রাবার টায়ারড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি), ৪টি লো-মাস্ট ফর্ক লিফট, ৪টি ফর্ক লিফট, ১টি রেইল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরএমজি), ২টি টাগ বোট, ২টি পাইলট বোট এবং ২টি ফাস্ট স্পিড বোট।

অধিক সংখ্যক জাহাজ বার্থিং, কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এবং কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ নির্মাণ করছে। চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড থেকে চিটাগাং বোট ক্লাবের মধ্যবর্তী জায়গায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট