চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কোরবানির পশুবাহী ট্রাক

চাঁদাবাজি রোধে জিরো টলারেন্স

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৮ জুলাই, ২০২০ | ১:৪৬ অপরাহ্ণ

ঈদুল আজহা উপলক্ষে চট্টগ্রামে আসা কোরবানির পশুর ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। প্রতি বছর পশুবাহী ট্রাককে চাঁদা দিয়েই নগরীতে ঢুকতে হতো। এমনকি পুলিশের উপস্থিতিতে টেন্ডলরা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করতো। তবে এবার জিরো টলারেন্সে থাকবে পুলিশ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মোস্তাক আহমদ বলেন, ‘এবার কোরবানির পশুবাহী গাড়ি থেকে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হবে না। পশু নিয়ে সোজা চলে যাবে বেপারিরা। যদি চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই আইনের আওতায় আনা হবে।’ তিনি বলেন, নগরীতে বাস-ট্রাকসহ পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মামলাও হয়েছে। যেকোনো ধরনের চাঁদাবাজির বিষয়ে জিরো টলারেন্স থাকবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চট্টগ্রামে কোরবানির পশু আনা হয়। বিশেষ করে উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর গরু নগরী ও জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে আসে। বিশেষ করে নগরীর প্রবেশপথ খ্যাত এ কে খান গেট ও সিটি গেট এবং জিইসি মোড় এলাকা হয়ে এসব পশুবাহী ট্রাক নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এ কে খান গেট ও সিটি গেট এবং জিইসি মোড় এলাকায় পুলিশের উপস্থিতিতে পশুবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছিল গতবছরও।

শুধু নগরীর প্রবেশপথ নয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানেও চাঁদাবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পশুবাহী ট্রাক থেকে সন্ত্রাসী ও পুলিশের নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ বেশি রয়েছে। তবে চলতি বছর চাঁদাবাজি রোধে জিরো টলারেন্স থাকবে বলে জানায় হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশও।
হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের কুমিল্লা জোনের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘রাস্তায় যেকোনো ধরনের চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স থাকবে। কোরবানির পশুবাহী ট্রাক তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে যাবে, সেজন্য কাজ করবে ট্রাফিক পুলিশ। এজন্য ২৪ ঘণ্টা রাস্তায় থাকবে পুলিশ। পশুবাহী ট্রাক নির্বিঘ্নে চলাচল করবে। কেউ বাধা দিতে পারবে না।’

গত বছর জিইসি মোড় এলাকার এমইএস কলেজ থেকে গণপূর্ত অধিদপ্তর গেট পর্যন্ত প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশের উপস্থিতিতে টেন্ডলরা ট্রাক দাঁড় করিয়ে দফারফার মাধ্যমে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল। ট্রাকভেদে ৫’শ থেকে এক হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছিল। শুধু জিইসি মোড় নয়, একই চিত্র সিটি গেট ও অলঙ্কার মোড়ে। পুলিশের উপস্থিতিতে চাঁদাবাজি করা হতো।
নগরী ছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে পশুবাহী ট্রাক আসে নগরীর বিভিন্ন হাট-বাজারে। বিশেষ করে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ উপজেলায় বিভিন্ন খামারি ও উদ্যোক্তার নিজেদের পালন করা গরু নগরীতে আনা হয়। কোরবানির হাটে আনা এসব গরুবাহী ট্রাক থেকেও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ এয়াছিন আরাফাত বলেন, কোরবানির পশুবাহী ট্রাকে ডকুমেন্ট যাচাই করার জন্য থামানো যাবে না। পশুবাহী ট্রাক নির্বিঘ্নে চলাচল করবে। কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হতে দেয়া হবে না। প্রতি বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক লাখ পশু চট্টগ্রামে আসে।

পশু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অলি আহমদ বলেন, ‘এখনো কোরবানির পশু আসা শুরু হয়নি। আরও সপ্তাহখানেক পর থেকে পুরোদমে শুরু হবে। তবে বিচ্ছিন্নভাবে আসতে আসা পশুবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি হয়নি বলে জানান তিনি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট