চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আক্রান্তের উর্ধ্বমুখীর মধ্যেই চলছে কোরবানির হাট ইজারার প্রক্রিয়া
আক্রান্তের উর্ধ্বমুখীর মধ্যেই চলছে কোরবানির হাট ইজারার প্রক্রিয়া

সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু রক্ষা হবে তা নিয়ে সংশয়

আক্রান্তের উর্ধ্বমুখীর মধ্যেই চলছে কোরবানির হাট ইজারার প্রক্রিয়া

ইফতেখারুল ইসলাম

৫ জুলাই, ২০২০ | ৪:৩৫ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার প্রতিদিনই বাড়ছে। গত চার দিনে গড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০৮ জন করে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে মারা গেছেন ১৮৭ জন। সঙ্গে বাড়ছে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন কোরবানির ঈদের পশুর বাজার বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। তাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার শঙ্কা আছে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা।

কোরবানির পশুর বাজারে সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় এবং স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু রক্ষা হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। করোনাকালে সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসন যখন গলদঘর্ম। তখন ব্যাপক জনসমাগম হয় এমন পশুর হাটে কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা হবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাই নগরীর গরুর হাটগুলো খোলা মাঠে স্থানান্তর করা উচিত।

চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্র জানায়, নগরীতে প্রতিবছর সাতটি স্থায়ী-অস্থায়ী বাজার ইজারা দেয়া হয়। এর মধ্যে স্থায়ী বাজার হলো বিবিরহাট, সাগরিকা গরু বাজার ও পোস্তার পাড় ছাগলের হাট এবং অস্থায়ী বাজারগুলো হলো কর্ণফুলী গরু বাজার, সল্টগোলা বাজার, কমল মহাজন হাট ও পতেঙ্গা বাটারপ্লাই পার্ক সংলগ্ন খোলা মাঠ। আগামী ৮ জুলাই বাজারগুলো ইজারা দেয়ার কথা।

চসিকের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা এখলাছ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ৮ জুলাই স্থায়ী-অস্থায়ী সাতটি বাজারের ইজারা দেয়া হবে। তবে এবার পশু কেনাকাটার বিষয়ে ইজারাদারদের কিছু শর্ত দেয়া হবে। এসব শর্ত মানলে তেমন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, কোরবানির পশুর বাজার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানোর বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সরকারি নির্দেশনা মতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত এসেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয় থেকে আরো নির্দেশনা আসবে। বিষয়টি আমরা তদারকি করব।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেয়াজুল হক পূর্বকোণকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি সব সংস্থা মিলে সমন্বিতভাবে নিশ্চিত করা হবে। তবে করোনার বিষয়ে দেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। তাছাড়া কোরবানিদাতার এখন অনলাইনে গরু-ছাগল কেনা শুরু করেছে। আগে মানুষ গরুর হাটে ঘুরার জন্য যেত। এখন ঢালাওভাবে যাবে না। পরিবারের কেউ একজন গিয়ে গরু কিনে নিয়ে আসবে। কারণ তারা এখন সচেতন। তবে কৃষক ন্যায্য দাম পাবে। কারণ মানুষ কোরবানি দিবে। তাই বেচাকেনা যথেষ্ট পরিমাণ হবে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৬৬৮ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৬ হাজার ৬৬৩ জন ও উপজেলায় ৩ হাজার ৫ জন। ইতোমধ্যে মারা গেছেন ১৮৭ জন, এর মধ্যে মহানগরে ১৩৬ জন এবং উপজেলায় ৫১ জন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ১৩১ জন। চট্টগ্রামের সাতটি ল্যাবে গত ৩০ জুন করোনাভাইরাস শনাক্তে ১ হাজার ৩৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, এর মধ্যে পজেটিভ আসে ৩৭২ জনের। ১ জুলাই মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৩৭৩টি, এর মধ্যে করোনা পজেটিভ আসে ২৭১ জনের। গত ২ জুলাই নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৩২৩টি, এর মধ্যে পজেটিভ আসে ২৮২টি। গত ৩ জুলাই নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ২৩৬টি, এর মধ্যে পজেটিভ আসে ২৬৩টি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট