চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অন্ধের মতো সমালোচনা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সহায়ক নয়: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ জুলাই, ২০২০ | ৮:৪৪ অপরাহ্ণ

‘অবশ্যই সরকারের ভুল যে কেউ ধরিয়ে দিবে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এটি থাকতে হবে বলে আমরা সেটিতে বিশ্বাস করি। আমরা মনে করি সমালোচনা কাজ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা বা ‘যারে দেখতে নাই তার চলন বাঁকা’ সেই মনোবৃত্তি অন্ধের মতো সমালোচনা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সহায়ক নয়। আজ শুক্রবার (৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত সাংবাদিকদের মাঝে করোনাকালীন সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশ এই করোনা ভাইরাস মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিলনা। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ  নিয়ে মোকাবেলা করার চেষ্ঠা করে যাচ্ছি। এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ভারত পাকিস্তানের চেয়েও কম, ইউরোপ আমেরিকার চেয়ে অনেক কম। আমরা যদি সঠিক ভাবে মোকাবেলা করতে না পারতাম মৃত্যুর হারতো ভারত পাকিস্তানের চেয়ে অন্তত বেশি হতো। আসুন আমরা সবাই মিলে এই মহামারিকে মোকাবেলা করি। আমাদের দেশ ও অর্থনীতিকে রক্ষা করি, আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে। সেই লক্ষ্যে আমরা যেন কাজ করি।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী’র সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজে’র যুগ্ন মহাসচিব মহসিন কাজী প্রমূখ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা ভাইরাস শুরু হবার পর অনেকেই শঙ্কা-আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। অনেক ধরণের বিশেষজ্ঞ নানা ধরণের মত দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকের ধারণা ও মতামত ভুল প্রমাণিত হয়ে আজকে করোনা ভাইরাসের সাড়ে তিন মাসে বাংলাদেশে আল্লাহর রহমতে একজন মানুষও নাখেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি। অনেকে আশা করেনি এধরণের সাহার্য্য সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। কিন্তু সরকার মোবাইল ফোনে মানুষের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। মসজিদের ইমামদের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। প্রায় ৭ কোটি মানুষ সরাসরিভাবে সরকারের সহায়তা পেয়েছে। আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো হয়েছে। মানুষের জন্য ত্রাণ তৎপরতা করতে গিয়ে দলের অনেক নেতা ও মন্ত্রী-এমপি আক্রান্ত হয়েছে, কেন্দ্রিয় কমিটির তিন নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির এই পরিস্থিতিতে সমগ্র পৃথিবীর রাষ্ট্রগুলো পর্যুদস্ত। বলা হচ্ছে চায়না খুব ভালোভাবে এটাকে মোকাবেলা করেছে। কিন্তু প্রথম দিকে চায়নাও এই ভাইরাসকে অস্বীকার করেছে। যে ডাক্তার এই ভাইরাসের সন্ধান দিয়েছিল তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিসাইল এন্টিমিসাইল কোনটিই কাজ করছেনা। তাদের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি কোনটাই কাজে লাগছেনা, ইউরোপের দেশগুলোতে মৃত্যুর মিছিল হয়েছে। পৃথিবীর কোন দেশ মুক্ত থাকেনি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে শারিরীকভাবে সুরক্ষা দেয়ার জন্য প্রথম থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। একই সাথে মানুষ যাতে না খেয়ে না থাকে, মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য তিনি ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করলে তিনি আমাকে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথমে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত অর্থ থেরেক আরো ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মোট ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে কারা সহায়তা পাবেন তারা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন গুলোই তালিকা করেছেন। যারা ইউনিয়নের বাইরে আছেন তাদের জন্য ডিসির সুপারিশ নিয়ে অন্তর্ভুক্তের অপশন রাখা হয়েছে। প্রথম দফায় ১ হাজার ৫’শ সাংবাদিকদের এই সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে ২৫০জন সাংবাদিক পাচ্ছেন। এবারে যারা বাদ যাবে অসহায় দুঃস্থ তারা পরবর্তীতে পাবে।

পূর্বকোণ / আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট