মাওলানা আনাস মাদানী কর্তৃক একটি নির্জলা ফোনালাপ সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই না বলে জানিয়েছেন হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে “জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে আমি মানুষকে নিয়ে মার খাইয়েছি” বলে যে কথা বলেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
আজ বুধবার (১ জুলাই) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের সাথে আমার বিন্দুমাত্রও সম্পর্ক নেই। অতীত-বর্তমানে কোন সময়ই জামায়াতের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল না; বরং পুরো জীবন আমার লেখালেখিতে ও লক্ষ লক্ষ মানুষের বিশাল সমাবেশে বয়ান-বক্তৃতার মধ্যে জামাতের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে আমি দেশবাসীকে সচেতন করে আসছি।
এর আগে গত ২৯ জুন জনৈক ব্যক্তির সাথে আল্লামা শফী পুত্র ও হেফাজতের প্রচার সম্পাদ্ক মাওলানা আনাস মাদানীর একটি ফোনালাপ ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ফোনালাপে আনাস মাদানী জুনাইদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতা ও ২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরে জুনাইদ বাবুনগরীর কারণেই হেফাজত মার খেয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তা পরিকল্পিত মিথ্যাচার দাবি করে বাবুনগরী আরও বলেন, হেফাজত আমিরের পুত্রের এমন মিথ্যাচার আমাকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলে আমি মনে করি। এগুলো আমার মানহানি করার অপচেষ্টা।
বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, কিছুদিন থেকে আমি লক্ষ্য করছি যে, তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একটি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং সাজানো কথা রটিয়ে, উস্কানিমূলকভাবে সরকার এবং প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। এসবের নিন্দা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমার নেই।
‘শফীপুত্র মাওলানা আনাস মাদানী থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশিত নয়’ জানিয়ে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মাওলানা আনাস মাদানী ফোনালাপে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার আমার ওপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছেন।
তিনি শাপলা চত্বরের মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে আমাকে জড়িয়ে এমন ডাহা মিথ্যা কথা বলতে পারবে, তা আমি আশা করিনি। অথচ জেলে গেলাম আমি, রক্ত দিলাম আমি। রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করলাম আমি। সেই রাতে হেফাজতের সমাবেশে কী হয়েছিল তা জাতি জানে, কিন্তু মামলার আসামি হলাম আমি।
শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে যা হয়েছিল তা আল্লামা শফীর অবগতিতেই হয়েছে বলে দাবি করেন আল্লামা বাবুনগরী।
বাবুনগরী বলেন, আমি আমীরে হেফাজতের নির্দেশমতে লালবাগ থেকে শাপলা চত্বরে গিয়েছি এবং আমীরে হেফাজতের পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত শাপলা চত্বরে অবস্থান করেছি। বারবার মিডিয়াকে বলা হয়েছে যে, সেদিন যা হয়েছে আমীরে হেফাজতের নির্দেশেই হয়েছে। সুতরাং এতদিন পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর নামান্তর।
এখনকার সরকারবান্ধব আলেমরাই ২০১৩ সালে জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করেছিল বলে দাবি করেন জুনায়েদ বাবুনগরী।