চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

কোরবানির হাট নিয়ে দোটানায় ক্রেতা-বিক্রেতা

ইফতেখারুল ইসলাম

১ জুলাই, ২০২০ | ৫:৫২ অপরাহ্ণ

করোনাভাইরাসের এই মহাদুর্যোগে মানুষ কোনভাবে ঈদুল ফিতর পার করলেও কোরবানি হাট নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায়। খোদ ইজারাদারের আশঙ্কা, ক্রেতা-বিক্রেতা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা না করলে হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা কঠিন হবে। তবে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কিছু নির্দেশনা আসছে। তার মধ্যে অনলাইনে গরু বিক্রি করে ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেয়াসহ সাতটি নির্দেশনা জারি করবে চসিক।
নগরীর দুই বৃহৎ গরুর বাজার বিবিরহাট এবং সাগরিকা সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, দুই হাটেই প্রস্তুতি চলছে। গরু রাখার স্থান ক্রেতা-বিক্রেতাদের চলাচলের পথ ইত্যাদি সংস্কার করা হচ্ছে। বাঁশ (খাইন) বাঁধা হচ্ছে। উপরে ত্রিপল দিয়ে বাজার সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আশঙ্কা বর্ষা এবার তাদের বেশ ভালভাবেই ভোগাবে। বর্ষার কারণে হাটে চলাচল কষ্টকর হবে। গরুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা আরো বেশি কঠিন হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের এস্টেট অফিসার এখলাস উদ্দিন আহমদ পূর্বকোণকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সিটি মেয়র খুবই কঠোর অবস্থানে আছেন। কারণ কোরবানি ঈদ পালনের পাশাপাশি মানুষকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে। তাই পশুরহাটগুলোতে কিছু নির্দেশনা জারি করা হবে। নির্দেশনাসমূহ হল, ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বিভিন্ন পয়েন্টে ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিক তথা শারীরিক দূরত্ব অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। অনলাইনে বিক্রিকে উৎসাহ দিচ্ছে। যারা অনলাইনে বিক্রি করবেন ক্রেতার কাছে বিক্রিত পশু বাসায় পৌঁছে দিতে হবে। হাটের প্রবেশ এবং বাহির আলাদা হতে হবে। যেদিকে প্রবেশ সেদিকে কেউ বের হতে পারবে না। বয়স্ক এবং শিশুদের হাটে আসা নিরুৎসাহিত করা হবে। নিয়মিত পরিষ্কার করা হবে। এছাড়া সচেতনতামূলক প্রচারণা অব্যাহত থাকবে।
সাগরিকা বাজারের ইজারাদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর পূর্বকোণকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কোরবানির গরু-ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য পশু বিক্রি করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই লক্ষ্যে বাজারের পরিসর বাড়ানো হচ্ছে। আশপাশের অলিগলিতেও কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে। তাছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। সিটি কর্পোরেশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছেন। তাছাড়া তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন থাকতে হবে। তারা সহায়তা না করলে কোন উদ্যোগই সফল হবে না। দেশের চাপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গরু আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারো সবচেয়ে আকর্ষণীয় গরু পাওয়া যাবে সাগরিকা বাজারেই। কারণ এই বাজারে বিক্রি করার জন্যই অনেকেই সারাবছর গরু লালন-পালন করেন। স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, মানুষ কাচা বাজারে যাচ্ছে। সেখানে নিজেকে রক্ষা করে বাজার করছেন। গরুর বাজারেও নিশ্চই তারা একইভাবে সচেতন থাকবেন।
গরুর দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মহামারীর কারণে এবার যেহেতু কোরবানিদাতার সংখ্যা কমে যাবে তাই গরুর দামও কিছুটা কমবে। কারণ আমাদের দেশ কোরবানি পশু উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষকেরা কোরাবানির চাহিদা অনুযায়ী গরু ছাগল উৎপাদন করেছে। কিন্তু এবার সে পরিমাণ কোরবানি না হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর বাজারে পর্যাপ্ত গরু থাকলে দাম কিছুটা কম থাকাটাই স্বাভাবিক।

 

 

 

পূর্বকোণ/ আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট