চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মিডিয়া সংলাপ: করোনার প্রভাবে বাড়বে বেকারত্ব, প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জুন, ২০২০ | ৬:০৮ অপরাহ্ণ

জনজীবনে কোভিড-১৯ এর প্রভাব : আমাদের করণীয় শীর্ষক এক মিডিয়া ডায়ালগ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে দৈনিক পূর্বকোণের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। ইয়ং পাওয়ার ইন সোসাল একশন (ইপসা) এর বাস্তবায়নে এবং একশন এইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ডায়ালগে আলোচকরা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও পড়েছে। একারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বেকার হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বেকারত্ব আরও বাড়বে। এর থেকে উত্তরণ করতে হলে প্রয়োজন মানসম্মত কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা। যুবাদের দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণ এবং সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সকল ধরনের প্রয়োজনীয় সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে যুবাদের দক্ষতা উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ রাখাসহ নানা পরামর্শ দেয়া হয়।
ইপসার উপপরিচালক নাছিম বানু শ্যামলীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার, জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ইপসার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমান, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান তাজুল ইসলাম, দৈনিক পূর্বকোণের স্টাফ রিপোর্টার এস এম ইফতেখারুল ইসলাম, ইমাম হোসাইন রাজু, ইপসার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা ইদ্রিস, প্রোগ্রাম অফিসার শোভন চৌধুরী, মিডিয়া ম্যানেজার সৈয়দ মোহন উদ্দিন, একশন এইডের কোরবান আলী, হাতেম আলী, নাজমুল হুদা, ডিইসি’র ফাউন্ডার সৌমেন কানুনগো, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারজানা পারভীন, এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার, ইপসার যুব গবেষকদের মধ্যে ছিলেন ইমরান, নাসিমি, স্বর্ণা, আরিফ, ইব্রাহিম, নাহিদা আক্তার, সুমি আক্তার, সেলিনা আক্তার ও সাকলাইন।

আলোচনার শুরুতে নগরীর ১৯ ও ৩৫ নম্বর দুইটি ওয়ার্ডের উপর ইপসার চালানোর জরিপ উপস্থাপন করেন ইপসার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা ইদ্রিস। জরিপে তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাব মানুষের জীবন ও জীবিকায় বেশ ভালভাবেই পড়েছে। এছাড়া খাদ্য ও খাদ্য সহায়তা, খাদ্য বন্টনে অনিয়ম, বাজার ব্যবস্থাপনায়, পারিবারিক সহিংসতা ও নারী নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার চিত্র উঠে আসে জরিপে। জরিপে তিনি দেখান, ১৮.৭ শতাংশ কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে আছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দিন মজুর ৬৫ শতাংশ। পরিবহন শ্রমিক ১২.৭শতাংশ। ছোট ব্যবসায়ী ১১.৭ শতাংশ, গামের্ন্টস শ্রমিক ৩.৪ শতাংশ। ৫০.৫ শতাংশ লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। ৪০.৮ শতাংশ কর্মসংস্থানমূভী দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরাধমূলক কর্মকা- জড়িয়ে পড়ছে ৫.৮ শতাংশ। খেলাধূলা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে ২.৪ শতাংশ মানুষের। ৬৩.৪ শতাংশ মানুষ মনে করে (১৯ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড) তাদের এলাকার লোকজন যেকোন উৎস থেকে খাবার বা আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। ১৬.৬ শতাংশ মানুষ মনে করে তাদের এলাকার লোকজন কোন উৎস থেকে খাবার পায়নি। ২০ শতাংশ কোন মন্তব্য করেন। ৩৭.১ শতাংশ মানুষ মনে করে করোনা দুর্যোগকালিন সময়ে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে সেবা প্রদানকারির সংখ্যা কমানো হয়েছে। ৩৩.২ শতাংশ মনে করে স্বাভাবিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনায় বলা হয়, ৮৭.৮ শতাংশ মানুষ বাজারে শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখে না।
আলোচনায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জরিপের প্রশংসা করে বলেন, সেবা কার্যক্রমের জন্য এই ধরনের জরিপ অতীব জরুরি। ইপসা সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছে। জরিপের যেসব সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে তা সমাধান করার লক্ষ্যে তিনি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। তাছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কম্পিউটার ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে আরো বেশি জোর দেয়া হবে। একইসাথে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত ফিরিঙ্গিবাজারস্থ হেলথ ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দক্ষ স্বাস্থ্য কর্মী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আরো সুদুরপ্রসারী উদ্যোগ নেয়া হবে। এই ধরনের একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

 

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট