চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিমান চলাচল বন্ধ : আটকা পড়েছেন চট্টগ্রামের লক্ষাধিক প্রবাসী

মোহাম্মদ আলী

৮ জুন, ২০২০ | ৬:২১ অপরাহ্ণ

করোনার কারণে দেশে আটকা পড়েছেন লক্ষাধিক প্রবাসী। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় তারা কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না। এর মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। পুনরায় বিদেশে ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনেকে শঙ্কার মধ্যে পড়ে গেছেন। আটকে পড়া প্রবাসীদের মধ্যে বেশিভাগ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার ও বাহরানের। এছাড়া মালয়েশিয়া, আমেরিকাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীও রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের সংখ্যা আরো বেশি। এর মধ্যে চট্টগ্রামের হবে লক্ষাধিক। এসব প্রবাসী ২০১৯ সালের নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দেশে ছুটি কাটাতে আসেন। কিন্তু করোনার সংক্রমণ শুরু হলে তারা দেশে আটকা পড়েন। বর্তমানের অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। অনেকে দেশে থাকা অবস্থায় চাকরিও হারিয়েছেন। যারা ব্যবসায় জড়িত তাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে আরো বেশি।
এদিকে দেশে কতজন প্রবাসী আটকা পড়েছেন তার কোন পরিসংখ্যান নেই। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে। তাদের কাছে শুধু বিদেশে যারা যান তাদের তালিকা থাকে।
এ প্রসঙ্গে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমাদের কাছে বিদেশ থেকে যারা দেশে আসেন তাদের কোন তালিকা নেই। যারা বিদেশ যান তাদের তালিকা থাকে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘পহেলা মার্চ থেকে বিদেশ থেকে দেশে আসেন ৩৯ হাজার ২৮৩ জন প্রবাসী। এর মধ্যে মার্চে দেশে এসে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন ৯৭৩ জন। এরা শুধু ইতালি, চীন, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী।
দেশে আটকাপড়া বোয়ালখালী উপজেলার চরনদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. বেলাল হোসাইন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘ছুটি কাটাতে এক মাসের জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি দেশে আসি । কিন্তু মার্চে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আর ফিরতে পারিনি। এক মাসের জন্য দেশে এসে বর্তমানে প্রায় ৪ মাস ধরে দেশে আটকা পড়েছি। অপরদিকে করোনা সংক্রমণের কারণে প্রবাসে আমার রেস্টুরেন্টটি বন্ধ রয়েছে। এতে আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতি শিকার হয়েছি।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই আবির সবজি মার্কেটে গ্রোসারির দোকান রয়েছে সৈয়দ কামরুল আজাদের। রাউজানের কদলপুর গ্রামের সৈয়দ বদু মিয়াজী বাড়ির বাসিন্দা কামরুল আজাদ চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ১৫ দিনের জন্য তিনি দেশে বেড়াতে আসেন। কিন্তু বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তিনি আর কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না।
দৈনিক পূর্বকোণকে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ৪ মাস ধরে আটকা পড়ার কারণে ব্যবসার বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে।’
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে ঠিকাদারি ব্যবসা করেন মো. সেকান্দর মিয়া চৌধুরী।
রাউজানের কদলপুর গ্রামের ছমদ আলী চৌধুরী বাড়ির বাসিন্দা মো. সেকান্দর মিয়া চৌধুরী চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দেশে আসেন। এক মাস ছুটি কাটিয়ে তার ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে তিনি আর ফিরে যেতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে কুয়েত প্রবাসী মো. সেকান্দর মিয়া চৌধুরী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দেশে আটকে পড়ার কারণে আমার ঠিকাদারি ব্যবসার বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে গাড়ি ও বিভিন্ন মূল্যবান মালামালও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কখন কুয়েত ফিরতে পারবো তা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছি।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট