চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সীতাকুণ্ড উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা, তবু সতর্কতা নেই!
সীতাকুণ্ড উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা, তবু সতর্কতা নেই!

সীতাকুণ্ড উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা, তবু সতর্কতা নেই!

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি

৩ জুন, ২০২০ | ৪:৩৬ অপরাহ্ণ

সীতাকুণ্ডে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে  বাড়ছে। আজ বুধবার (৩ জুন) সকাল পর্যন্ত এখানে মোট ১০৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া মারা গেছেন তিন নারী-পূরুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে সংক্রমনের দিক থেকে এ উপজেলাকে ইতোমধ্যে  করোনার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলে ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু তবুও অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই সচেতনতা পরিলক্ষিত না হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা হতাশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার উপজেলা সীতাকুণ্ডে শুরু থেকেই করোনা সংক্রমনের হার অনেক বেশি। চট্টগ্রামের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় এখানে অনেক বেশি মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমন পর্যবেক্ষন করে উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে এ এলাকাটিকে করোনা সংক্রমনের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এরপরও এখানে তেমন জনসচেতনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। প্রতিদিনই এখানে হাটবাজারে অসংখ্য মানুষের দেখা মিলছে। নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার ছাড়াও তারা জামা-কাপড়-সাজ সজ্জার সরঞ্জাম কিনছেন অহরহ। তাছাড়া এই মহূর্তে সবচেয়ে জরুরী যে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা কিংবা মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ব্যবহারও করছেন না অনেকেই। ফলে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।  

আজ বুধবার (৩ জুন) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা  ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, এ সময় পর্যন্ত এখানে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১০৬ জন। এছাড়া মারা গেছেন তিন জন। প্রথম মৃত্যু ঘটে সৈয়দপুর ইউনিয়নে। সেখানে এক যুবক মারা যান। অপর দুই জন সলিমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে সলিমপুর ইউনিয়নের লতিফপুরে আলী আকবর নামক (৪৫) নামক ব্যক্তি মারা গেছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। এর আগেও সলিমপুরে এক বৃদ্ধা নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, আমরা শুরু থেকেই অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হতে অনুরোধ করে আসছি। জরুরী প্রয়োজনে কেউ বাইরে গেলেও তিনি যেন অবশ্যই মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করেন সে কথাও বলেছি বারবার। আর সামাজিক দুরত্বের কথা তো প্রতি মহূর্তেই বলছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। বাজারগুলোতে গেলে মনে হয় আমরা যেন করোনা জয় করে ফেলেছি! মানুষ নিজেকে রক্ষার গুরুত্বও যদি না বোঝে তবে তাদেরকে আর কিভাবে বোঝানো যাবে?

 তিনি আরও বলেন, আশার কথা হচ্ছে এখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও বেশিরভাগ রোগীর শরীরেই তেমন কোন উপসর্গ নেই। ফলে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে তারা সুস্থ হয়ে উঠছেন। ইতোমধ্যে ১০৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ৫০ জন  সুস্থও হয়ে উঠেছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সচেতন না হওয়ায় হতাশ সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়। তিনি বলেন, এখানে করোনা দ্রুত  ছড়াচ্ছে। এজন্য এটি করোনার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করে জনগনকে সচেতন করেছি আমি। কিন্তু আশানুরুপ সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। মানুষ একেবারে স্বাভাবিক সময়ের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অভিযান চালালে তখন তারা চলে যান আবার আমরা ফিরে আসার পর শুনি আগের মত অবস্থা। নিজে যদি নিজের ভালো না বোঝে তাহলে তাদেরকে কি করে বোঝানো যাবে ?

করোনাকে অবহেলা না করে সবাইকে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা, মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহারসহ নিয়মকানুন মেনে চলার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

পূর্বকোণ/সৌমিত্র চক্রবর্তী- এএ  

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট