চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

দর্শণার্থীশূন্য নগরীর পর্যটন স্পট

মোহাম্মদ আলী, ছবি-শরীফ চৌধুরী

২৯ মে, ২০২০ | ৪:৩৮ অপরাহ্ণ

প্রতিবছর ঈদের দিন থেকে পর্যটকদের পদভারে মুখর থাকতো নগরীর পর্যটন স্থাপনাসমূহ। চলতো তা টানা এক সপ্তাহ ধরে। ঈদের নামাজের পর থেকে ভিড় বাড়তো এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত আনন্দ মেতে থাকতো সবাই। কিন্তু করোনার কারণে ঈদের সময়ে নগরীর পর্যটন স্থাপনাসমূহে না যাওয়ার জন্য নির্দেশনা জারি করে সিএমপি পুলিশ। এ কারণে এবার ওই পথে পা মাড়াইনি কেউ। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে পর্যটন স্থাপনাসমূহ।

চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটন স্পটসমূহ হচ্ছে, ফয়’সলেক কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্ক, ফয়’সলেকস্থ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, পতেঙ্গা সী-বিচ, বহদ্দারহাট স্বাধীনতা কমপ্লেক্স, পতেঙ্গাস্থ বাংলাদেশ বাটারফ্লাই পার্ক, বো বো ওয়ার্ল্ড, আগ্রাবাদ জাদুঘর, চট্টগ্রাম শিশু পার্ক ইত্যাদি। এসব পার্কসমূহে ঈদের সময়ে কোটি কোটি টাকা আয় হতো। এ আয় দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রদান এবং যাবতীয় খরচ নির্বাহ হতো। কিন্তু এবার ঈদে বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির শিকার হয় পর্যটন স্পটসমূহ।

এমনিতে করোনার কারণে গত মার্চে প্রবলভাবে ধাক্কা খায় পর্যটন খাত। ওই মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রামের সকল পর্যটন স্পট। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটনশিল্প। সরকারি টানা সাধারণ ছুটি দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে আগামী দিনে নতুনভাবে এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের কাছে সহজ শর্তে প্রণোদনার আবেদন জানিয়েছিল চট্টগ্রামের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

পার্কসমূহের সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের সবগুলো পর্যটন স্পট গত আড়াই মাস ধরে বন্ধ। এতে বেকার হয়ে পড়েছে এ খাতে জড়িত ১০ হাজার মানুষ। ক্ষতি হয়েছে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা।

নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের বিপরীতে অবস্থিত স্বাধীনতা কমপ্লক্স। এটির পরিচালক  মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এটি খোলা থাকতো। দর্শনার্থীদের পদভারে মুখর থাকতো। সাপ্তাহিক বন্ধ এবং বিশেষ দিবসগুলোতে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বেড়ে যেত। বিশেষ করে দুই ঈদে সপ্তাহখানেক ধরে মানুষের ভিড় লেগে থাকতো। তাতে ব্যবসাও ভাল হতো। কিন্তু করোনার থাবায় গত ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে গেছে এ কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সে দর্শনার্থীর প্রবেশ বন্ধ থাকায় ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছি। এ মুহূর্তে সরকার পর্যটন খাতে সহজ শর্তে প্রণোদনা না দিলে আমাদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ বাটারফ্লাই পার্ক সিনিয়র জিএম মোহাম্মদ আশরাফ আলী বলেন, ‘নগরীর পতেঙ্গাস্থ হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ বাটারফ্লাই পার্কে নানা রকম প্রজাপতি দেখতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ জন দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। দর্শনার্থীর ফি দিয়ে পার্কটি ভালই চলছিল। কিন্তু করোনার কারণে গত ২০ মার্চ থেকে পার্কটি বন্ধ হয়ে যায়। তাতে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় পার্কের আয়। গত আড়াই মাস ধরে আর্থিক ক্ষতি গুণছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। ক্ষতির কারণে বর্তমানে স্টাফদের বেতন দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট