চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

এই প্রথম ঈদে বন্ধ ট্রেন

স্টেশনে নেই নির্ঘুম রাত কাটানো ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ মে, ২০২০ | ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ

রেল স্টেশন মানেই যাত্রীদের অনাগোনায় ব্যস্ত একটি জায়গা। ঈদ এলেতো এ চিত্র আরো ভয়াবহ হয়ে যায়। যাত্রীতে কানায় কানায় ভরে যায় স্টেশন। কেউতো আবার টিকেট সংগ্রহের আশায় রাতদিন কাটিয়ে দিতেন স্টেশনে। কারণ, ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হত ঈদের ১০ দিন আগেই।
তাইতো নাড়ির টানে বাড়ি যেতে অগ্রিম টিকেট সংগ্রহে স্টেশনে নির্ঘুম রাত পার করে দিতেন যাত্রীরা। প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়েও যাত্রা করতে দেখা গেছে তাদের। তবে এবার যাত্রীদের আনাগোনায় ব্যস্ত সময় পার করা চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনটি সময় কাটাচ্ছে যাত্রীশূন্য অবস্থায়। শুধু কি তাই, স্টেশনে যাচ্ছেন না সেখানে কর্মরত মানুষগুলোও। একটি ভাইরাস বদলে দিয়েছে পুরো বিশ্বের চিত্র। যার চিত্র ঈদেও যাত্রীশূন্য চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মো. আনসার আলী পূর্বকোণকে বলেন, ‘বাংলাদেশে রেল চলাচলের পরবর্তী ইতিহাসে এই প্রথম ঈদেও বন্ধ রাখা হয়েছে ট্রেন। যেখানে ঈদে আমরা প্রতিদিন গড়ে ২০-২২ হাজার টিকেট বিক্রি করতাম। যা শুধুমাত্র আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রির হিসেব। সে যায়গায় আজ বন্ধ রয়েছে পুরো বাংলার রেল যোগাযোগ। যা রেল চলাচলের পরবর্তী সময়ে এই প্রথম। এতে করে শুধুমাত্র ঈদযাত্রায় কয়েক কোটি টাকা অর্থ আদায় থেকে বঞ্চিত হবে রেলওয়ে বিভাগ’। প্রতিবছর ঈদে স্টেশনে যাত্রী সামলাতে হিমশিম খেতো রেলওয়ে পুলিশ ও রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা। তারাও আজ যাত্রীশূন্য স্টেশনটির মতই শুনশান। লাঠি হাতে নিয়ে যাত্রীদের ভিড় সামলাতে দেখা যাচ্ছে না তাদের। হ্যান্ড মাইক নিয়ে ট্রেনের ছাদ থেকে যাত্রীদের নামার অনুরোধও করছে না কেউ। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিদর্শক আমানউল্লাহ পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ার পর থেকেই ব্যস্ত সময় পার করতে হত আমাদের। টিকেট প্রত্যাশীদের ভিড় সামলাতে রাতদিন করতে হত পরিশ্রম। এবার মহামারীর কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন। তাই পুরো স্টেশন জুড়ে বইছে নীরবতা। যদিও পণ্যবাহী ট্রেন চলছে তাও আজ (শনিবার) থেকে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে স্টেশনের নিরাপত্তায় নিয়মিত কাজ করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলে জনিয়েছেন এই কর্মকর্তা’।
একই মন্তব্য করেছেন রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজ ভূঁইয়া। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঈদে যাত্রীদের টার্গেট করে কিছু অসাধু ব্যক্তি লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে। ব্ল্যাকে টিকেট বিক্রির কথা বলে হাতিয়ে নেয় যাত্রীদের সর্বস্ব। এমনকি স্টেশনকেন্দ্রিক বারে ছিনতাইকারীদের আনাগোনা। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেলওয়ে পুলিশ স্টেশনে চালায় বাড়তি নজরদারি। বৃদ্ধি করা হতো ফোর্স ও ডিউটি। এমনকি নিরাপত্তা জোরদারে সাদা পোশাকেও কাজ করতেন পুলিশ সদস্যরা। তবে এবার এর কিছুই নেই। মহামারী ঠেকাতে বন্ধ রাখা হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেনের চলাচল। তবুও স্টেশন ও রেলের সম্পদ রক্ষায় নিয়মিত ডিউটি করছেন পুলিশ সদস্যরা’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট