চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এলো ‘সামাজিক দূরত্বের’ ঈদ

আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ

রায়হান আজাদ

২৩ মে, ২০২০ | ১০:১০ পূর্বাহ্ণ

“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানি তাকিদ।”
আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এ গান আমাদের সবার মনে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেয়। মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ও প্রাণবন্ত উৎসব ঈদুল ফিতর। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর এদিন ধনী-নির্ধন, তরুণ-বৃদ্ধ, নেতা-কর্মী সবাই খোলা মাঠে মিলিত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহান প্রভুর শাহী দরবারে প্রার্থনা করে। ঈদ মানে খুশি। ফিতর মানে দান। সুতরাং ঈদুল ফিতর মানে দানের খুশি। তবে করোনা মহামারীর কারণে এ বছরের ঈদ হবে সামাজিক দূরত্ব মেনেই। সবার আগে জীবন বাঁচানো ফরজ। তাই নিজ নিজ বাসা- বাড়িতে অবস্থান করা সবার সমীচীন হবে। সরকার কর্তৃক নির্দেশিত নিয়ম-কানুন আমাদের সবাইকে মেনে চলতে হবে।
এ দান ব্যাপক অর্থবোধক। আল্লাহর প্রিয় বান্দারা এ দিনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দেন। ঈদের দিন ফিতরাহ দেয়া হয়, সবাইকে আদর-মুহব্বত দেয়া হয় এবং মাসব্যাপী কষ্ট-সাধনা করার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে বান্দাদেরকে ধন্যবাদ দেয়া হয়। তাই ঈদুল ফিতর যথার্থ অর্থ বহন করে। হাকীমুল উম্মত আল্লামা আশরাফ আলী থানভী (রহ.) ঈদুল ফিতরকে রমজানের রোজার ইফতারে আকবর তথা বড় ইফতারের সাথে তুলনা করেছেন। যেহেতু এ ঈদ বা ইফতারের পরে আর রোজা করতে হয় না সেহেতু এটি শব্দগত তাৎপর্যে সাযুজ্যপূর্ণ।
ইসলামে ঈদের ব্যাপক ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে। ঈদের নামাজশেষে পারস্পরিক কোলাকুলি ও সালাম বিনিময় আমাদের অন্তর থেকে ঘৃণা-বিদ্বেষ তাড়িয়ে দেয়। ঘরে ঘরে সেমাই-ফিন্নির আপ্যায়ন গ্রহণ এবং মুরুব্বিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ছোটদের প্রতি ¯েœহ বিতরণের ফলে ঈদ হয়ে উঠে সাম্য-ভ্রাতৃত্ব ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার সেতুবন্ধন। ঈদ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে একতার শিক্ষা দেয়, আত্মবলিয়ান হয়ে সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা ও ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাসুলুল্লাহর আদর্শে উজ্জীবিত করে।
ঈদের দিন সকালে সকালে ঘুম থেকে উঠা উত্তম। গোসল করা, ভাল জামা-কাপড় পরিধান করা, খুশবো লাগানো, ঈদগাহে যাবার পূর্বে মিষ্টি খাওয়া, হেঁটে হেঁটে তাকবীর সহকারে ঈদগাহে একপথে যাওয়া এবং অন্যপথে ফেরা প্রভৃতি ঈদের মুস্তাহাব আমল।
আসুন, মহিমান্বিত এ দিনকে আমরা যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করি। আর শপথ নেই যা কিছু রমজান থেকে শিক্ষা পেলাম তার আলোকে বাকী জীবন গড়বো। হারাম কাজ ছেড়ে দেবো এবং সবসময় ফরজ ইবাদত পালন করে যাবো, আর্ত-মানবতার সেবায় নিয়োজিত হবো, ইনশাল্লাহ।
একজন মুমিন কখনো অমুসলিমদের সংস্কৃতিকে নিজের করে নিতে পারে না। রাসুল সা. বলেছেন, “ যে ব্যক্তি ভিন্ন জাতির অনুসরণ করল বস্তুত সে তাদেরই দলভূক্ত হয়ে গেল। তাই ঈদের আনন্দ উপভোগের সময় আমরা যেন কোন কিছু অতিরঞ্জিত না করি-সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হে আল্লাহ! আমাদের তোমার দেয়া জীবনাদর্শ ইসলাম সর্বক্ষেত্রে মেনে চলার তৌফিক দান করুন। আমীন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট