চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাজারে আসছে কালীপুরের সুস্বাদু লিচু

বাঁশখালী সংবাদাদাতা

১৬ মে, ২০২০ | ৮:১১ অপরাহ্ণ

বাজারে আসতে শুরু করেছে বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর সুস্বাদু লিচু। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বারের চেয়ে এবার ফলন হয়েছে ভালো। কালীপুরের লিচু ব্যবসায়ী বাগান মালিকেরা প্রথমে করোনার প্রভাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকলেও পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা লিচু ক্রয়ে বাগানে আসতে থাকায় সেই দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। লিচু বিক্রি গত ৩ দিনে অধিকারে বেড়ে গেছে। উৎপাদিত লিচু বাজারে বেচাকেনা চলছে। চলতি মৌসুমে ১০০ কোটি টাকার লিচু বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন।

উপজেলার গুনাগুরি, সদর আমিন হাট, রেজিষ্ট্রি অফিস, পৌর সদর জলদীতে পাইকারী ব্যবসায়ীরা লিচু বেচাকেনা শুরু করেছে। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, কক্সবাজার, বান্দরবান জেলার পাইকারী ব্যবসায়ীরা ট্রাক নিয়ে এসে লিচু বিক্রি শুরু করেছে। এই লিচুর ভরা মৌসুমে প্রতিদিন ১৫/২০ ট্রাক লিচু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাইকারী ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত ৩০/৪০ লাখ টাকার লিচু বেচাকেনা চলছে। বাগানের কাছে প্রতি হাজার লিচু ১৫০০/১৮০০ টাকা দামে পাইকারী বিক্রি চলছে। লিচু চাষী ফজল আহমদ, আজিজ আহমদ বলেন, লিচু বিক্রি ভালো চলছে। এই এলাকার মানুষের জীবন জীবিকা চলে লিচু বিক্রির মাধ্যমে। মাসিক চুক্তি, ব্যাংক ঋণ, বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঘ, ফাল্গুন মাস থেকে লিচুর মকুল আসা শুরু করে। ঐ সময় থেকে বাগানের মালিকদের কাছ থেকে আগাম টাকা দিয়ে লিচু বাগান ক্রয় করে থাকেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কালীপুর, বৈলছড়ি, পালেগ্রাম, জলদী, চাম্বল, সাধনপুর, গুনাগুরি, পুকুরিয়া ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের লিচুর ফলন হয়েছে। রাজশাহী, বোম্বে-১, বোম্বে-২, কলিকাতা, চায়না-৩ ও স্থানীয় জাতের লিচু আবাদ হয় বেশি প্রতি বাগানে ১০০/১৫০ লিচু গাছ রয়েছে। গুটি জাতের লিচু স্থানীয়ভাবে রোপন হয় বেশি। ১ হেক্টর জমিতে ২৪৭ টি গাছ রয়েছে। ছোট গাছগুলোতে ৩ থেকে  সাড়ে ৩ হাজার ও বড় লিচু গাছগুলোতে ১২/১৩ হাজার লিচুর ফলন ধরে। দোআঁশ, বেলে উঁচু জমিতে লিচু গাছের ফলন ভালো হয়ে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কালীপুরে বাজারে বাজারে ছোট আকারে বিচি ও রসে ভরা লিচুগুলো পাইকারি ব্যবসায়ী ক্রয় করে নিতে দেখা গেছে। কালীপুরে ব্যবসা মো. হারুন জানান, ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ১৬টি লিচুর চারা গাছ ক্রয় করা হয়েছে। ফলন হয়েছে ভালো। ৩০ হাজার টাকার ফলন বিক্রি করা হয়েছে। আরও ৮০/৯০ টাকার ফলন বিক্রি করা যাবে। গুনাগুরি ব্যবসা মো. ইলিয়াছ জানান, স্থানীয় লিচু গুলো বাজার আসতে শুরু করেছে। কলিকাতা ও বোম্বাই বড় আকারের লিচুগুলো আরও ২ সপ্তাহ পরে বাজারে আসতে শুরু করবে।

বাঁশখালী কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক বলেন, কালীপুরের লিচু দেশে খুব সুনাম রয়েছে। বাঁশখালীতে সাড়ে ৬০০ হেক্টর জমিতে লিচুর ফলন হয়েছে। গত ২০১৮ সালে ৮০ কোটি টাকা, ২০১৯ সালে ৯০ কোটি টাকা এবং ২০২০ সালে ১০০ কোটির টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।  তবে এবার পাইকারী ব্যবসায়ীরা দেরিতে বাজারে এসেছে। বাঁশখালী কালীপুরের লিচুগুলোতে করোনার প্রভাব পড়েনি। কৃষি পণ্য পরিবহনে সরকারের অনুমতি থাকায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে লিচু ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এবারে রেকর্ড পরিমাণ ফলন হয়েছে বাগান গুলোতে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট