চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ঝাঁজ কমেছে আদা রসুন পেঁয়াজের

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

১৩ মে, ২০২০ | ৫:২০ পূর্বাহ্ণ

খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে মসলা জাতীয় পণ্য আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দামেও তেজী ভাব নেই। করোনাভাইরাস ও লকডাউনের পর হু হু করে বেড়েছিল মসলা জাতীয় এসব পণ্যের দাম। করোনায় ত্রাণসামগ্রীতে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা, রমজান, আমদানি অপ্রতুলতা-এসব মিলে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়েছিল। একইভাবে লাফিয়ে বেড়েছিল আদা ও রসুনের দাম। গত সপ্তাহ থেকে পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম। ভারত, মিয়ানমারসহ আমদানি করা পেঁয়াজ ও দেশি জাতের পেঁয়াজের জোগান বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে দামও কমতে শুরু করেছে। দেখা যায়, মাসখানেক আগে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল কেজিতে ৩০ টাকা দরে। করোনা সংক্রমণের পর ভারত ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম দ্বিগুন বেড়ে যায়। গত সপ্তাহে ভারতীয় আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল কেজিতে ৬০-৬৫ টাকায়। গতকাল মঙ্গলবার ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকা দরে। গত সপ্তাহে তা ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা বিক্রি হয়েছিল ৫০-৫৫ টাকায়। হল্যান্ড থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা, চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকায়। গত সপ্তাহে এসব পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
পেঁয়াজের আড়তদার মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, করোনা সংক্রমণের পর আমদানি সংকট ও বাজারে অতিরিক্ত চাহিদা থাকায় দাম বাড়তি ছিল। এখন আমদানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় বাজারে জোগান বেড়েছে। এছাড়া টিসিবিও পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। সব মিলে পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে রয়েছে।
পেঁয়াজ ছাড়াও কমেছে আদা ও রসুনের দাম। গতকাল মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে চীন থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৯০-৯৫ টাকায়। কয়েক দিন আগে তা ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এক সপ্তাহ আগেও কেজিপ্রতি ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এর আগে অস্থির ছিল আদার বাজার। ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে তা বিক্রি হয়েছিল ৯৫ টাকা দরে। মাসখানেক আগে ছিল ১৮০-২০০ টাকা।
গত সপ্তাহে পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে অভিযানের পর থেকে আদার দাম কমতে শুরু করেছে। আমদানিকারকদের কারসাজিতে আদার বাজার অস্থির হয়ে ওঠেছিল। ৮২ টাকায় আমদানি করা আদা পাইকারি বাজারে লাফিয়ে বেড়ে বিক্রি হয়েছিল ২৫০ টাকা দরে। প্রশাসনের অভিযানের পর তা এখন ১৩০ টাকায় নেমে এসেছে। পেঁয়াজের সঙ্গে ঝাঁজ কমেছে আদারও।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণায় ব্যাংক ও সরকারের আমদানি সংক্রান্ত অফিসগুলোর কার্যক্রম অনেকটা স্তিমিত ছিল। এছাড়াও লকডাউনের পর ভারত ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ ও রসুন আমদানি কমে এসেছিল। সরবরাহ সংকটের কারণে পণ্যের দাম বাড়তি ছিল। তবে, বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। সরবরাহ সংকট কেটে যাওয়ায় দাম কমছে নিত্যপণ্যের।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, করোনা সংক্রমণে ত্রাণ বিতরণ ও রমজান মাসকে ঘিরে ভোগ্যপণ্যের বাজারে ক্রেতার চাপ ছিল। বাজারে অতিরিক্ত চাপ কমে আসা এবং পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়া সব ধরনের পণ্যের দাম এখন কমতির দিকে রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট