চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়িতে করোনা জয় করে বাড়ি ফিরলেন সেই নারী

নাইক্ষ্যংছড়ি সংবাদদাতা

৮ মে, ২০২০ | ১২:৩৬ অপরাহ্ণ

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের জান্নাতুল হাবীবা করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে থাকা সেই নারী করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ।

শুক্রবার (৮ মে) সকাল বেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক টিম তাকে করোনাভাইরাস মুক্ত ঘোষণা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার ছাড়পত্র দেন।

টানা ১১ দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি এখন সুস্থ।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কম্বোনিয়া গ্রামের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত রোগী ছিলেন তিনি।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তিনি নিজেই নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালের আউটডোরে শরাপন্ন হয়ে কর্মরত চিকিৎসককে জ্বর ও সর্দিকাশি কথা জানালে চিকিৎসক নমুনা সংগ্রহ করে।

সেই নমুনা কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হয়।

এরপর ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই সদর ইউনিয়নের কম্বোনিয়া গ্রাম এলাকার ১৭ ঘর-বাড়ী লকডাউন করে দেয় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসন। পরদিন দুপুর থেকে আক্রান্ত জান্নাতুল হাবিবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করানো শুরু হয় হয়।

এ ঘটনার পর জান্নাতুল হাবীবার পরিবারের ২০ সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে (আইইসিডিআর) পাঠানো হয়। সেখানে তাদের একি পরিবারের শিশুসহ তিন জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।

বিষয়টি পূর্বকোণকে নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. আবু জাফর মো. ছলিম জানান, নাইক্ষ্যংছড়িতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দ্বিতীয় রোগী জান্নাতুল হাবীবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে ভালোভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুইবার নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার আইইসিডিআরে পাঠানো হলে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাই জান্নাতুল হাবীবাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

এছাড়া একই পরিবারের শিশু সন্তানসহ তিন ব্যক্তির শারীরিক অবস্থাও ভালো। ওই তিন জনকে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে এম্বুলেন্সে জান্নাতুল হাবীবাকে নিজ বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, জান্নাতুল হাবিবা মহিলা তাবলীগের চিল্লাহ লাগাতেন মাঝে মাঝে। বেশ কিছু দিন তাকে এলাকায় চোখে পড়েনি। সে একটি চাকুরীও করতেন পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের অধিনস্থ পাড়া স্কুলে। কেউ কেউ বলছে ওই চাকুরী নেই আবার কেউ কেউ বলছেন আছে। তবে কারও স্পষ্ট নয়। এই করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকা বা চট্টগ্রাম ফেরত আসেন বলে সন্দেহ এলাকাবাসীর।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি জানান, করোনাকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে যাওয়া জান্নাতুল হাবীবা সংস্পর্শ আরও তিনজন পজেটিভ সনাক্ত রোগী আইসোলেশনে রয়ে যাওয়ায় এবং জান্নাতুল হাবীবাকে আরও সপ্তাহ খানেক হোম কোয়ারেন্টেইনে থাকার নির্দেশের ফলে ১৭ বাড়ির লকডাউন (তালা) আপাততে বলবৎ রয়েছে। তবে এলাকাবাসী অহেতুক যাতে কেউ বাইরে না বের হয়, সেই বিষয়ে কড়া নজরদারীতে রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৬ এপ্রিল উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার কোনাপাড়া ৫৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিক প্রথম করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। হাসপাতালের আইসোলেশনে ১০দিন চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি। তিনি এখন পুরো দমে সুস্থ আছেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট