চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছেন সেই বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিক

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

২৬ এপ্রিল, ২০২০ | ৪:৩৯ অপরাহ্ণ

করোনা শনাক্তের ১০ দিন পর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন সেই তুমব্রুর বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিক। আজ রবিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিট থেকে এম্বুলেন্স করে নিজ বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তার সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ওই করোনা পজেটিভ শনাক্ত বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিক ঢাকা থেকে তবলীগ ফেরত হয়েছিলেন গত ৬ এপ্রিল । উপজেলা প্রশাসন খবর পাওয়ার সাথে সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেন তাকে। ১৫ এপ্রিল নমুনা সংগ্রহ করা হয় তাঁর। সেই নমুনার রিপোর্টে করোনা পজেটিভ আসে ১৬ এপ্রিল। ওইদিন তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে মোবাইলের মাধ্যমে চিকিৎসা দিলেও একদিন পর উর্ধ্বতনের নির্দেশে রোগীকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়

দায়িত্বরত চিকিৎসকের ন্যাশনাল গাইড লাইনের প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা পেয়ে আইসোলেশন থেকে আজ (২৬ এপ্রিল) রবিবার সে  সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। এর আগে আইসোলেশনে এক সাপ্তাহ ধরে অবস্থান করার পর গত ২৩ এপ্রিল কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো হয় তার দ্বিতীয় বারের নমুনা। ওই নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে ২৪ এপ্রিল। নিয়ম মাফিক ওই রোগীসহ হাসপাতালের সংস্পর্শ চিকিৎসক ও আইসোলেশন ওয়ার্ড বয়ের নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় ২৫ এপ্রিল। তবে করোনা শনাক্ত রোগী নমুনা টেস্ট ছিল তৃতীয় দফার রিপোর্ট বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ। 

এদিকে, ২৬ এপ্রিল রবিবার বিকেলে তৃতীয় বারের রিপোর্টটিও করোনা নেগেটিভ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে পূর্বকোণকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা (ইউ,এইচ,এফ,পি, ও) ডা. আবু জাফর মো. ছলিম বলেন, করোনা পজেটিভ পাওয়া রোগী আবু ছিদ্দিকের দুই দফা টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় তাঁকে আমরা খানিকটা সুস্থ বলতে পারছি। তাকে আমরা ঘরে ফিরিয়ে যাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করছি। ন্যাশনাল গাইড লাইনের নিয়ম অনুযায়ী তিনি ঘরে গিয়ে আবারও ৭দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর ওই সাত দিনের মাথায় চতুর্থ বারের নমুনা সংগ্রহ করে ওই রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তাকে চুড়ান্ত ভাবে দাবী করা যাবে রোগী পুরোদমে সুস্থ। তখন রোগীর সমাজে চলাফেরা করতে আর কোন বাঁধা থাকবে না। চতুর্থ রিপোর্ট না আসার আগে সুস্থতার বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে ন্যাশনাল গাইড লাইনের অনুযায়ী চিকিৎসা পেয়েছেন এবং আইসোলেশন থেকে আজ সে মোটামুটি সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর উপজেলার হাসপাতালের আবু ছিদ্দিক জানান, আমি করোনার রোগী ছিলাম। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা আমাকে সঠিক চিকিৎসা দিয়েছেন এবং অধিকতর সেবা করেছেন বলেই আমি আজ খানিকটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী করো সাথে সংস্পর্শ না হয়ে সাতদিন যাবত থাকার ওয়াদা করছি। আর আইসোলশনে থাকা অবস্থায় চিকিৎসকরা খুব সেবা দিয়েছেন, তাদের আমি মঙ্গল কামনা করি।

উল্লেখ্য, ঢাকা তবলীগ ফেরত আবু ছিদ্দিক (৫৯) নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার কোলালপাড়াস্থ কোনাপাড়া বাসিন্দা। আবু ছিদ্দিকের নমুনা সংগ্রহ করা হয় গত ১৫ এপ্রিল। ১৬ এপ্রিল বান্দরবান জেলায় এই প্রথম নমুনার রিপোর্ট আসে পজেটিভ। একদিন পর নিয়ে আসা হয় সদর নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালের আসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তার এলাকার ৩৬ পরিবারকে দেয়া হয় লকডাউন। তার স্ত্রীসহ সংস্পর্শ ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাতে সবাইর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/এম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট