চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনার প্রভাব : মুড়ির সংকট, বেড়েছে দাম

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২৫ এপ্রিল, ২০২০ | ৬:০৪ অপরাহ্ণ

রোজায় ইফতারির প্রধান খাবারগুলোর মধ্যে মুড়ি অন্যতম। মুড়ি ছাড়া ইফতারি কল্পনাই করা যায় না। অল্প দামের এ খাবারটি সারা বছরেই খেয়ে থাকে সবাই। কিন্তু রমজানের এ একটি মাস সারা দেশে মুড়ির চাহিদা বাড়ে প্রায় পাঁচগুন। কারণ মুড়ি ছাড়া ইফতার সম্পূর্ণ হয় না। তাই এসময় রমজান উপলক্ষে মুড়ি পল্লীতে নারীরা মুড়ি ভাঙতে ব্যস্ত থাকে। তেমনি দিনরাত এক করে মুড়ি ভাঙতে ব্যস্ত থাকে বকশীর হাটের মুড়ি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবারে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এখানে আগের মত নেই কোন ব্যস্ততা।

নেই রমজানের কোনো প্রস্তুতি। প্রতি বছর এসময় রমজান উপলক্ষে বকশীর হাটের মুড়ি ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পর করতো। ব্যস্ত থাকতো মুড়ি ভাঙতে। দম ফেলার জো থাকতো না কোনো ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এবারে বকশী হাটের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। প্রায় সব দোকান বন্ধ। দুই চারটে দোকান খোলা থাকলেও নেই বেচা বিক্রি। নেই ক্রেতার ভীড়। কিন্তু দু-চারটে দোকানে থাকলেও মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ছড়া দামে। বকশীর হাটের এক ব্যবসায়ী পলাশ কান্তি দে বলেন, এবারে করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের ব্যবসা লাটে উঠেছে। বেচা-বিক্রি নেই। নেই ক্রেতা। পূর্বে রমজানের একমাস আগে থেকেই আমাদের এখানে কয়েক লাখ টাকার মুড়ির অর্ডার পড়তো। প্রতিদিন বিক্রি হতো কয়েক লাখ টাকার মুড়ি। এবার তার চারভাগের একভাগ বেচা-বিক্রি নেই, পড়েনি কোনো নতুন অর্ডার। তবে এবারে মুড়ির দাম অন্যান্য বারের চেয়ে একটু বেশি। এক বস্তা মুড়ি ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু আগে এক বস্তা মুড়ি ৮শ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হত। দেখতে লাল দেশীয় উপায়ে তৈরি মুড়ির বস্তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ টাকায়। এছাড়া মিরসরাই থেকেও শহরে মুড়ি আসে। যা দিয়ে চট্টগ্রামের মুড়ির চাহিদা মেটানো হয়। সারা বছর হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা থাকলেও রমজান আসলে এই চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় কয়েকগুণে। কিন্তু এবার হাতে ভাজা মুড়ি বাজারে নেই বললেই চলে। কারণ মিরসরাই থেকে শহরে পর্যাপ্ত মুড়ি আসেনি। এর কারণ করোনাভাইরাসের কারণে মিরসরাই মুড়ি পল্লীতে নেই মুড়ি ভাঙার ব্যস্ততা। গতকাল শুক্রবার বাজারে দেখা যায়, ভাজা মুড়ির চাহিদা থাকলেও বাজারে কারখানায় উৎপাদিত রাসায়নিক মুড়িই বেশি। আবার এ মুড়িগুলো বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। এছাড়া বাজারে এক কেজি মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। যা সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।

কর্ণফুলী বাজারের ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমরা বকশীর হাট থেকে মুড়ি এনে বিক্রি করি। কিন্তু এবার সেখানে মুড়ির সংকট। অনেক ব্যবসায়ী দোকান খুলেও না। যে কয়েকটা খোলা রয়েছে তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই আমাদেরকেও বেশি দামে মুড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট