চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

নানা অজুহাতে চিড়ার দাম দ্বিগুণ

মরিয়ম জাহান মুন্নী

২৪ এপ্রিল, ২০২০ | ৭:০১ অপরাহ্ণ

  •  ত্রাণ হিসেবে বিতরণ
  •  মজুত করার প্রবণতা
  •  রোজায় চাহিদা বৃদ্ধি

সারাদিন রোজা রেখে শরীরে ক্লান্তি ভর করে। চিকিৎসকদের অভিমত এসময় যতটা সম্ভব ঠান্ডা, সহজপাচ্য ও স্বাভাবিক খাবার শরীরের জন্য ভালো। তাই রমজান মাসে অন্যান্য ভাজাপোড়া খাবারের পাশাপাশি চিড়ার চাহিদা বেড়ে যায় রোজাদারদের কাছে। সারা বছরের চেয়ে রমজান মাসে দেশে চিড়ার চাহিদা বাড়ে এক চতুর্থাংশ। রমজানে ইফতারিতে অনেকের পছন্দ তালিকায় স্থান পায় চিড়া। কিন্তু রমজান মাস শুরুর আগে থেকেই অন্যান্য পণ্যের সাথে বেড়ে যায় চিড়ার দামও। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবারে চিড়ার দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

এভাবে চিড়ার দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানায়, দেশে লকডাইন চলছে। এতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে অনেক সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রি বিতরণ করায়, ন্যায্যমূলে পণ্য বিক্রি ও রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের চাহিদায় বেড়ে যাওয়ায় চিড়ার দাম আরো বেড়েছে। এমনিতেই রমজান মাস এলেই বেড়ে যায় সকল নিত্যপণ্যের দাম। কিন্তু এবারে রমজানের আগেই বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ক্রেতাদের মধ্যে বাড়িতে শুকনো খাবার মজুত করার প্রবনতায় আরো ২ মাস আগেই বেড়েছে পণ্যের দাম।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এবারে রমজানের জন্য নতুন করে চিড়া আমদানি করা যায়নি। দেশ লকডাইন হওয়ার আগেই আমরা ব্যবসায়ীরা ঢাকার গাজীপর ও ফেনী থেকে কিছু চিড়া আমদানি করেছি। যেগুলো এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া চিড়ার দাম বাড়ার পেছনে আরো একটি কারণ হলো করোনাভাইরাসের কারণে অনেকে ঘরে শুকনো জাতীয় খাবার প্রয়োজনের অধিক মজুত করেছে আগেই। তখনি চিড়াসহ অন্যান্য শুকনো খাবারের দাম বেড়েছে। আবার এরই মধ্যে চলে এসেছে রোজা।

রোজায় দেশে চিড়ার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই চাহিদা বাড়ায় আবার নতুন করে বেড়েছে দামও। ২ মাস আগে প্রতি বস্তা চিড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায়। যখন করোনাভাইরাসের কারণে হঠাৎ করে বাজারে চিড়ার চাহিদা বেড়ে যায় তখন প্রতি বস্তা চিড়া আবার ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। আবার রমজান উপলক্ষে ১দিন আগে পর্যন্ত এক বস্তা চিড়া বিক্রি হয়েছে ২৭শ’ টাকায়। কিন্তু গতকাল আবার পাইকারি বাজারে চিড়ার দাম কমেছে। গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জে প্রতি বস্তা চিড়া বিক্রি হয়েছে ২৫শ’ টাকায়। সামনে চিড়ার দাম আরো কমবে। কারণ এখন কৃষকদের ঘরে নতুন ধান উঠছে। তাই সামনে নতুন ধানের চিড়া আসবে বাজারে। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আগের দামে বিক্রি হবে চিড়া।

এদিকে খুচরা বাজারে ২ মাস আগেই বেড়েছে চিড়ার দাম। রমজান উপলক্ষে আরো এক দফা বেড়ে দাম। তাই গতকাল খুচরা বাজারে দেখা যায় চিড়ার দাম বেড়েছে পাইকারি দামের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। বাজারে খুচরা ১ কেজি চিড়া বিক্রি করছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। নতুন ধানের চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১শ’ টাকায়।
এছাড়া চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে সারা বছর চট্টগ্রামে চিড়ার চাহিদা মাত্র ১৫ থেকে ২০ টনের মত। কিন্তু রমজান মাসে শুধু চট্টগ্রামেই ১৫শ’ টন চিড়ার বিক্রি হয়। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক তৃতীয়ংশ বেশি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট