চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বাগান ও আড়তে নষ্ট হচ্ছে কলা

বিক্রি কমেছে তিন চতুর্থাংশ

মরিয়ম জাহান মুন্নী

১৮ এপ্রিল, ২০২০ | ৭:০৬ অপরাহ্ণ

ক্রেতা ও বিক্রেতার অভাবে নগরীর আড়তগুলোতে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কয়েক লাখ টাকার কলা। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বর্তমানে কলার বিক্রি কমেছে চার ভাগের তিন ভাগেরও বেশি। আড়তদাররা জানান, নগরীতেই দৈনিক নষ্ট হচ্ছে কয়েক লাখ টাকার কলা। ফিরিঙ্গীবাজার এলাকার ফলের আড়তদার মো. হাবিবুর রহমান মন্টু বলেন, স্বাভাবিক সময়ে নগরীতে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার কলা বিক্রি হতো। কিন্তু এখন প্রতিদিন মাত্র ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার কলা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বৈশাখ মাসে পাকা কলা বাগান থেকে তুলে নতুন কলার চারা রোপন করা হয়। তাই এসময় বাগানে প্রায় সব কলা পেকে যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের কারণে শহরে মানুষ না থাকায় কলার চাহিদাও কম। এতে আগের মত বিক্রি হচ্ছে না কলা। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আড়তদাররা খুব সমস্যায় পড়েছি। কারণ আমাদের আড়তদারদের অনেকের কাছে টাঙ্গাইল, নওগাঁ, মুন্সিগঞ্জ, দিনাজপুরে কলার

বাগান রয়েছে। আমার কাছেও ৮টি কলার বাগান আছে। কিন্তু এ মুহূর্তে কলা বিক্রি না হওয়ায় বাগানেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কলা। আমার নিজেরই প্রায় ৫০ লাখ টাকার কলা বাগানেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সামান্য পরিমাণ কলা নগরীতে আনলেও তা বিক্রি হচ্ছে না। যেমন ক্রেতা নেই, তেমনি আগের মত বিক্রেতারাও নেই। কলা চাষে খুব অল্পতেই সফলতার মুখ দেখা যায়। আবার ক্ষতি হলেও বড় রকমের ক্ষতি হয়। আগে জাতভেদে কলার দাম ভিন্ন ছিল। আর এখন সব জাতের কলার কান্দি একই দামে বিক্রি হচ্ছে। আগে এক কান্দি কলা বিক্রি হতো ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকার মধ্যে। সিজন ছাড়াই বিক্রি হতো ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকায়। কিন্তু এখন এক কান্দি কলা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১শ’ থেকে ১২০ টাকায়। তাও আবার এখানকার সবগুলো ফলের আড়ত মিলে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ জন খুচরা বিক্রেতা কলা নিতে আসে। তারাও খুব অল্প পরিমাণ কলা ভ্যানে করে নিয়ে বিক্রি করে। কারণ তারা ভয়ে থাকে কলা বিক্রি হবে কিনা। এমন পরিস্থিতিতে বাগানের পাশাপাশি প্রতিদিন আড়তেও কয়েক লাখ টাকার কলা পচে যাচ্ছে। কলার কয়েক প্রকার জাতের মধ্যে উন্নত জাতের কলা মানিক, চিনি চাম্পা, চাঁপা, অনুপম, মেহের সাগর ও দেশি কলা। এসব কলার মধ্যে বাংলা কলার দাম একটু বেশি। কিন্তু বর্তমানে সব কলা একই দামে বিক্রি হচ্ছে।

২ নম্বর গেট এলাকার কলা ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস বলেন, আমি সিজনাল ফল বিক্রি করি। কলার সিজনে কলা বিক্রি করি। মানুষ ফল বেশি খায় ঠিকই। তবে অন্যান্য ফলের চেয়ে কলার দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় সব শ্রেণির মানুষ কলা খেয়ে থাকে। তাই ধনী থেকে গরীব সবারই পছন্দের একটি ফল কলা। যার কারণে ফলের মধ্যে কলার ব্যবসা খুব জমজমাট। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারণে রাস্তায় মানুষ না থাকায় কলা বিক্রি হচ্ছে না বললেই চলে। দামও কম। আগে আমি একাই ২০ থেকে ৩০ কান্দি কলা দিনে বিক্রি করতাম। এখন দিনে ৩ থেকে ৪ কান্দি কলাও বিক্রি হচ্ছে না । আগে এক ডজন কলা বিক্রি হতো ৮০ থেকে ১শ’ টাকায়। আর এখন এক ডজন কলা বিক্রি করছি মাত্র ৪০ টাকায়। এমন পরিস্থিতিতে আমরাও অনেক কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট