চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সাতকানিয়া লোহাগাড়া লকডাউন

পূর্বকোণ ডেস্ক

১৬ এপ্রিল, ২০২০ | ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ

  • সাতকানিয়া পৌরসভা ১ নং ও ৮নং ওয়ার্ডে দুজন শনাক্ত,
  • ইছামতি আলীনগরে নতুন ৫ ব্যক্তি শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সাতকানিয়া উপজেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন। দিকে করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লোহাগাড়া উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
আমাদের সাতকানিয়া সংবাদদাতা সৈয়দ মাহফুজ-উননবী খোকন জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সাতকানিয়া উপজেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধা বৈঠকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হয় । তবে জরুরি পরিসেবা, চিকিৎসা সেবা, গণমাধ্যম, কৃষিপণ্য-খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ব্যাংকিং সেবা, মোবাইল ব্যাংকিং, ওষুধ শিল্প সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মী লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়া দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাট বাজার খোলা রাখার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-ই আলমের সভাপতিত্বে সভা সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর মোহাম্মদ মশিউর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বশিরুল ইসলাম, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সফিউল কবীর, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কামরুল হোসাইন, সমাজসেবা কর্মকর্তা রিদুয়ান উদ্দীন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ, কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-ই আলম বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির বৈঠকে সাতকানিয়া উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত পুরো উপজেলা লকডাউনের আওতায় থাকবে। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারির প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির প্রথম করোনা ধরা পড়ে। পরদিন ১২ এপ্রিল সাতকানিয়া পৌরসভা ১ নং ও ৮নং ওয়ার্ড এলাকায় আরো দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ গতকাল সাতকানিয়া ইছামতি আলীনগর এলাকায় আরো ৫ ব্যক্তি শনাক্তের খবর পাওয়া যায়।
আমাদের লোহাগাড়া সংবাদদাতা এমএম আহমদ মনির জানায়, করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লোহাগাড়া উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। গতকাল বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাত ৯টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান। বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকে এই লকডাউন কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। এসময়ের মধ্যে অন্য উপজেলার কেউ লোহাগাড়ায় প্রবেশ করতে পারবে না। লোহাগাড়া থেকেও কেউ বের হতে পারবে না। উপজেলায় প্রবেশের সব পথে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিসেবার যানবাহন ও ব্যক্তি এই সিদ্ধান্তের আওতামুক্ত থাকবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপজেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবেলায় এবং সংক্রমিত জেলা ও উপজেলাসমূহ হতে জনসাধারণের প্রবেশ ও বাহির নিয়ন্ত্রণের লক্ষে ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটি’র সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লোহাগাড়াকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। জনস্বার্থে এ আদেশ কার্যকর করা হল। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, লকডাউনের সময় জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে কেউ বের হতে পারবে না। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হল। তবে লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ব্যাংকিং ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী। চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, রোগী, ঔষধ বহনকারী যানবাহন ও কর্মী। জরুরী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, খাদ্যদ্রব্য, শিল্পপণ্য, শিশু খাদ্য, পশু খাদ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মী। কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানী, সংবাদপত্র বহনকারী ও কর্মী।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লোহাগাড়া উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ৯টা থেকে আদেশ কার্যকর হবে। সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের তাদের ইউনিয়নের সকল প্রবেশ পথসমূহ বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। যাতে কেউ লোহাগাড়া থেকে বাইরে যেতে না পারে ও কেউ প্রবেশ করতে না পারে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট