সীতাকুণ্ডে কুড়িয়ে পাওয়া একপ্রকার গাছের ফল (ক্ষুদ্র মার্বেল আকৃতির) ভিজিয়ে পানি পান করলে করোনা মুক্ত হওয়া যাবে বলে হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ফলে মঙ্গলবার দুপুর থেকে এ ফলটি খুঁজতে রাস্তায় নেমে পড়েন অনেকে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিজ নিজ বাড়ির সামনের রাস্তা বা উঠোনে এটি কুড়িয়ে পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর থেকে সীতাকু-ের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে এক ধরণের গাছের ফল (বিচি) পাওয়া যাচ্ছে যা খেলেই করোনা মুক্ত হওয়া যাবে! এই খবরের পর বাড়বকু- বড়–য়াপাড়া, সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, পৌরসদর থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় এ গুজব ডালপালা ছড়াতে থাকে এবং অনেকেই বাড়ির সামনে ও আশপাশে খুঁজে ঐ ফলটি বের করেন। বাড়বকু- বড়–য়াপাড়ার বাসিন্দা স্থানীয় সাংবাদিক নির্দেশ বড়–য়া জানান, দুপুর ১টার দিকে তার গ্রামের কিছু মহিলা এই ফলটি সংগ্রহ করতে থাকেন। এটি নাকি বাড়ির আশপাশেই কুড়িয়ে পেয়েছেন তারা। এই ফল খেলে করোনা মুক্ত হওয়া যাবে-এটিই তাদের বিশ্বাস। এসব শুনে সাংবাদিক নির্দেশ বড়–য়া তাদেরকে এসব গুজব বলে মন্তব্য করলে তারা উল্টো তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
সৈয়দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, আমার এলাকার রণি নামক এক যুবক এ ফলটি নিয়ে আসে। পরে শুনতে পাই সবাই এ ফলটি কুড়িয়ে সংগ্রহ করছেন। অনেকটা অশ্বথ গাছের ফলের মত এই ফলটি কুড়ানোর হিড়িক লেগে যায় রীতিমত। এটি ডুবিয়ে পানি খেলেই নাকি করোনা মুক্ত হওয়া যাবে! সীতাকু- পৌরসদরের মহাদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা বিপ্লব নন্দী বলেন, সন্ধ্যার পর হঠাৎ এরকম করোনা মুক্তির মহৌষধের কথা বিভিন্ন জনের কাছে শুনলাম। কেউ নাকি এটি নিজের বাড়ির উঠোনে পাচ্ছে কেউ নাকি নিজের ঘরের সামনের রাস্তায় কুড়িয়ে পাচ্ছেন এটি। আমার আশপাশের অনেক ঘরের মানুষই এটি পেয়েছে জেনে কৌতূহলবশত আমার স্ত্রীও রাস্তায় বের হয়ে ঘরের সামনে একটি ফল খুঁজে পান। এই ফলটি ভিজিয়ে খেলে করোনা মুক্ত হওয়া যাবে বলে শুনেছেন তিনি। তবে এর সত্যতা কতটুকু তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
এদিকে সূত্রগুলো জানিয়েছে এই ফল বা বিচিটি খেলে করোনা মুক্ত হওয়া যাবে- এমন খবর সীতাকু- ছাড়িয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের আরো বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
সীতাকু- উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ। তিনি বলেন, কোন ফল বা বিচি খেলে করোনা চলে যাবে একথা সত্যি নয়। এটি পুরোপুরিই গুজব। বরং না জেনে এ ধরণের ফল বা তা ভিজিয়ে পানি খেলে উল্টো রোগাক্রান্ত হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই গুজবের উপর ভিত্তি করে এ ধরণের কোন ফল বা বিচি কেউ না খাবার পরামর্শ দেন তিনি।